রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকের আগে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলাল না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্য পুলিশকে এড়িয়ে এনসিটিসিকে গ্রেফতারি বা তল্লাশির অধিকার দিলে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার সামিল বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন পট্টনায়ক, নরেন্দ্র মোদী সহ প্রায় এক ডজন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে রাজ্যগুলির। মমতার চাপেই এনসিটিসি নিয়ে ৫ মে আলাদা বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। ওই আলোচনায় তিনি নিজেও হাজির থাকবেন। কিন্তু, ওই সংস্থার কর্মপদ্ধতির যে বিবরণ (‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’) রাজ্যগুলিকে পাঠানো হয়েছে তাতে গ্রেফতারি ও তল্লাশির অধিকারের কোনও পরিবর্তন হয়নি।
রাজ্যগুলির আশঙ্কার জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই জানিয়েছিল, ইউএপিএ আইনের ৪৩এ ও ৪৩বি ধারা মেনে চলবে এনসিটিসি। ৪৩এ ধারায় কাউকে গ্রেফতার করা বা তল্লাশি চালানোর অধিকার পাওয়া যায়। ৪৩বি ধারায় কাউকে গ্রেফতার করলে তাঁকে নিকটবর্তী থানায় নিয়ে যেতে হবে। কেন্দ্রের যুক্তি, ধৃত ব্যক্তিকে স্থানীয় থানায় নিয়ে গেলে রাজ্য পুলিশকে এড়িয়ে কাজ করার প্রশ্নই উঠছে না। ফলে, রাজ্যগুলির আশঙ্কা অমূলক। খসড়া কর্মপদ্ধতিতেও এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী, এনসিটিসি-র স্থায়ী পরিষদ বা স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলে এনসিটিসির ডিরেক্টরের পাশাপাশি সব রাজ্যের সন্ত্রাস-দমন শাখার কর্তারাও থাকবেন। কেন্দ্রের যুক্তি, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা ছাড়া এই সংস্থা কাজ করতে পারবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ৫ মে-র বৈঠকে মাওবাদীদের হাতে অপহরণের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির কথাও তুলবে কেন্দ্র। এই ধরনের ঘটনায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এক্তিয়ার নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে এনসিটিসি-র মতো সংস্থা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের। তবে এখন না বদলালেও পরে কেন্দ্র অবস্থান বদলাবে না এমন কথা বলছেন না তাঁরাও। যুক্তি, পাল্টা যুক্তির লড়াইয়ে কারা এগিয়ে থাকে সেটাই দেখার। |