ছত্তীসগঢ়ের সুকমার অপহৃত জেলাশাসকের মুক্তি নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হল মাওবাদী ও সরকারের মধ্যে।
অ্যালেক্স পল মেননকে ছাড়ার জন্য আট বন্দিকে ছাড়ার দাবি জানিয়েছিল মাওবাদীরা। শুক্রবার সেই শর্ত পাল্টে মাওবাদীরা ১৭ জন বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মেননকে ছাড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সময়সীমা বাড়াতে তারা প্রস্তুত। কিন্তু রাজ্যকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এ দিন বলেন, “রোজ এক এক রকম শর্ত আসছে। কোনও দিন আট, কোনও দিন ১৭ জনকে ছাড়ার দাবি। একটা নির্দিষ্ট কিছু বলা হোক।” অবস্থান স্পষ্ট করার ব্যাপারে রমন সিংহ বলেন, “মধ্যস্থতাকারীরা আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছে। সরকারই তো আগে মধ্যস্থতাকারীদের নাম ঘোষণা করেছে। পরে মাওবাদীরা করেছে। সরকার উদ্যোগী না হলে এ সব কি সম্ভব হত?”
এর মধ্যেই শুক্রবার সকালে সরকার এবং মাওবাদীদের চার মধ্যস্থতাকারী দ্বিতীয় দফার বৈঠক করেন। মনে করা হচ্ছে সুকমার পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা টারমেটলায় মাওবাদীরা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাই আজ, শনিবার সকালে তাঁদের সুকমা হয়ে টারমেটলা যাওয়ার কথা। সরকার পক্ষের মধ্যস্থতাকারী নির্মলা বুচ
|
অ্যালেক্স পল মেনন |
এবং সুযোগ্য মিশ্র শুক্রবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও ছিলেন। এ দিন রাতেই ক্যাবিনেট সাব-কমিটির বৈঠক হয়।
রাজ্য সরকারের অতিথি নিবাসে এ দিন বৈঠকের পরে নিমর্লা বুচ বলেন, “আলোচনা সদর্থক পথেই এগোচ্ছে।” তাঁরাও কি টারমেটলা যাচ্ছেন? নির্মলার জবাব, “না, আমরা যাচ্ছি না।” বি ডি শর্মার মতে, এখন খুঁটিনাটি বিষয় সামনে না আসাই ভাল।
শুক্রবার মাওবাদীরা অভিযোগ করেছে, পুলিশ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অত্যাচার চালাচ্ছে। আদিবাসীদের খুন করছে। বুধবার নয়াদিল্লিতে বি ডি শর্মাও একই অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর মতে এটা ‘ব্যবস্থার’ সমস্যা। মেননকে অপহরণের নিন্দাও করেননি শর্মা। তাঁর এই প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন মহল মনে করেছিল, তিনি মাওবাদীদের কাছে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ‘সঠিক বার্তা’ পৌঁছে দিতে চাইছেন।
শুক্রবার তারই জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, “জেলাশাসককে অপহরণের সময় মাওবাদীরাও এক জন আদিবাসী এবং এক জন সংখ্যালঘুকে খুন করেছে। ‘জন-আদালত’ বসিয়েও মাওবাদীরা অনেক আদিবাসী মারছে।” পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “মাওবাদী সমস্যা নিয়ে ‘ক্রাইসিস পলিসি’ তৈরি করা উচিত, তা আমি এনসিটিসি-র বৈঠকে বলেছিলাম। একা ছত্তীসগঢ় এটা করলে তো হবে না।”
শুক্রবার মাওবাদীরা ছ’জন অপহৃতকে মুক্তি দেয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন গ্রামবাসী এবং এক জন পুলিশকর্মী। এ দিন তাঁদের মুক্তি দেওয়ার সময় মাওবাদীরা পুলিশকর্মীর কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে নিয়েছে যে, তিনি পুলিশের চাকরি ছাড়বেন। এ দিনই সুকমা ও দোরনাপালের কাছে মাওবাদীরা কিছু প্রচারপত্র ছড়িয়েছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে। |