ট্যাক্সিভাড়া নিয়ে নানা দাবিতে এখনও জট
ট্যাক্সির নৈশ ভাড়া চালু হয়ে গেলেও বিরোধ মিটল না। শহরের কোনও ট্যাক্সি সংগঠনই এই নিয়ম পুরোপুরি মানতে রাজি নয়। কারও দাবি, নৈশ ভাড়া নেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর, কেউ বা দাবি করেছে ট্যাক্সির ভাড়া বাড়ানো হোক দিনে-রাতে সব ক্ষেত্রেই। নৈশ ভাড়ার সময়সীমা বাড়ানোর দাবি তুলেছে খোদ পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের অনুগামী সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স ইউনিয়ন’ (মন্ত্রী হওয়ার আগে মদনবাবু এই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন)। তা বিবেচনার আশ্বাসও দিয়েছেন মন্ত্রী। অন্য দিকে, সব সময়ের জন্যই ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলেছে ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’। এমনকী, তা মানা না-হলে ট্যাক্সি ধর্মঘটের প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছে তারা। এই দাবি অবশ্য মানার ইঙ্গিত দেননি মন্ত্রী। এ দিকে, প্রতিশ্রুতি মতোই শুক্রবার থেকে চালু হয়ে গিয়েছে বর্ধিত নৈশ ভাড়ার চার্ট।
‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স ইউনিয়ন’ (পিটিইউ)-এর আর্জি: রাত সাড়ে দশটা নয়, বর্ধিত ভাড়া চালু হোক রাত ন’টা থেকেই। পিটিইউ-এর সম্পাদক সুভাষ সাউ এ দিন পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন। তাঁদের আরও দাবি, ১৫ শতাংশ থেকে বেশি হোক বাড়তি ভাড়ার হার। এই আর্জি বিবেচনার আশ্বাস দেন মদনবাবু। ট্যাক্সিতে চার জনের বেশি যাত্রী না-নেওয়ার বিষয়টিকেও কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
ট্যাক্সির যাত্রী-ভাড়া বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট কিছু দাবি নিয়ে ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ (বিটিএ)-এর সঙ্গে ইতিমধ্যে পরিবহণমন্ত্রীর বিরোধের মাত্রা বেড়েছে। এ দিন বিটিএ-র তরফে বিমল গুহ বলেন, “সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত ভাবে আমাদের দাবির কথা জানাব। সুবিচার চাইব রাজ্যপালের কাছেও। এর পরে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে ধর্মঘটের পথে যাব।” এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “ওঁদের এই ব্যবহার সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতার সামিল। এ রকম বিরোধিতা করলে ওঁরা ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত না করে নিশ্চিত ক্ষতির দিকে নিয়ে যাবেন।” বিমলবাবুর নাম না-করে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “কেউ হয়তো স্বার্থসিদ্ধির জন্য এ রকম করছেন। চালকেরা নিশ্চয়ই তা শুনে নিজেদের ক্ষতি করবেন না।”
হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি এ দিন ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ (সিটিএ) এবং ‘ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন ট্যাক্সিড্রাইভার্স অর্গানাইজেশন’-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবহণমন্ত্রী। পরে মদনবাবু বলেন, “ওঁরা বিটিএ-র আন্দোলনের সঙ্গে নেই। তবে ওঁরা জানিয়েছেন, অনেক রাজ্যে রাতের ট্যাক্সিভাড়া দিনের চেয়ে ২৫-৩০ শতাংশ বেশি। এ রাজ্যেও রাতের ট্যাক্সিভাড়া ও রকম বাড়ানো হোক। সময়সীমা বাড়িয়ে করা হোক ৯টা থেকে ভোর সাড়ে ছ’টা। আমি বিষয়টা দেখছি।” সিটিএ-র সম্পাদক তারকনাথ বারি পরে বলেন, “মন্ত্রী আমাদের বলেছেন, ভাড়া বৃদ্ধির দরজাটা বন্ধ ছিল। খুলতে দাও। আস্তে আস্তে সব হবে।”
রাতের বর্ধিত ট্যাক্সিভাড়ার তালিকা এ দিন প্রকাশ করেন পরিবহণমন্ত্রী। তিনি জানান, শীঘ্রই এর ৫০ হাজার প্রতিলিপি ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ট্যাক্সি সংগঠনগুলিও এই তালিকা চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বিলির আশ্বাস দিয়েছে।
এ দিকে, ট্যাক্সির উপরে বিজ্ঞাপনের ফলক লাগাতে সরকার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সেই ফলকের জন্য ট্যাক্সির ছাদের ক্ষতি হচ্ছে। ট্যাক্সি-মালিকেরা এ দিন পরিবহণমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, ছাদে না লাগিয়ে ট্যাক্সির দু’পাশে বিজ্ঞাপনের বোর্ড লাগানোর সুযোগ দেওয়া হোক। মন্ত্রী এই আর্জিও বিবেচনার আশ্বাস দেন। এর পাশাপাশি, ট্যাক্সি-মালিকেরা মন্ত্রীকে জানান, চার জনের বেশি যাত্রী না-নেওয়ার সরকারি ঘোষণায় তাঁদের লোকসান হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরে মদনবাবু বলেন, “এটা আমার কথায় হয়নি, আদালতের সিদ্ধান্ত। চার যাত্রীর সঙ্গে বাচ্চা থাকলে তাকে বা তাদের রেখে কি বড়রা চলে যাবেন? তা ছাড়া, আদালত ট্যাক্সিতে ৪+১ জন যাত্রী নিতে বলেছে। ওই এক জন কে, স্পষ্ট করে বলা নেই। পুলিশকে তাই বলছি, চার যাত্রীর সঙ্গে একটি বাচ্চা থাকলে তাঁদের ছাড় দেবেন।” দুপুরে দেড়টা থেকে দুটো ‘লাঞ্চ’ ফলক লাগানো ট্যাক্সি যাত্রী নিতে অস্বীকার করলে সংশ্লিষ্ট চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ারও আশ্বাস দেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলেন, “চালকদের বিভিন্ন দাবি সরকার বিবেচনা করছে। কিন্তু পরিষেবার ব্যাপারে ওঁদেরও সচেতন হতে হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.