সিন্ডিকেট-দ্বন্দ্বের জের
বহাল হয়েই যুবককে পিটিয়ে ফেরার সেই তারক
শিল্প ধর্মঘটের দিনে যাদবপুরে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনার জেরে চাকরিতে সাসপেন্ড হয়েছিলেন তিনি। কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল তথা স্থানীয় তৃণমূলকর্মী সেই তারক দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিউটিতে না-গিয়ে তিনি হিংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছিলেন। সাসপেনশন ওঠার পরে বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দেওয়া তারকবাবু ফের ওই দিনই রাতে এক যুবককে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল।
প্রদীপ ঘোষ নামে প্রহৃত যুবকটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে।
এই ঘটনায় তারকবাবু ও তাঁর দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পাটুলি থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, আপাতত তিন জনই ফেরার। উল্লেখ্য, প্রদীপবাবু ও তাঁর গোটা পরিবার তৃণমূলের সমর্থক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূলকর্মীরা। তা হলে এই শত্রুতার কারণ কী?
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের বক্তব্য: এর পিছনে রয়েছে ইমারতি ‘সিন্ডিকেট’ঘটিত রেষারেষি। সিন্ডিকেটের মাল কে জোগাবে, তা নিয়ে গোলমালের জেরেই তারকবাবু এবং তাঁর দুই ভাই (গোপাল ও কালু) প্রদীপবাবুর উপরে চড়াও হন বলে পুলিশের দাবি। প্রদীপবাবু এলাকায় ইমারতি মালপত্র সরবরাহের একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। আবার তারকবাবুর ভাইয়েরা ওখানকারই অন্য সিন্ডিকেটের সদস্য, উপরন্তু ওই তল্লাটে জমি কেনা-বেচার সঙ্গেও যুক্ত। পুলিশি সূত্রের খবর: সম্প্রতি পাটুলির রবীন্দ্রপল্লির একটা জমিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষে গোলমাল বেঁধেছিল। তারই জেরে বৃহস্পতিবারের হামলা।
কনস্টেবল তারক দাস প্রহৃত প্রদীপ ঘোষ
কী হয়েছিল সেই রাতে?
পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাঘাযতীন স্টেশনের কাছে এক সিমেন্ট-ডিলারের অফিসে বসে ছিলেন প্রদীপ। পাথরকুচি বোঝাই একটা লরিকে যেতে দেখে তিনি আটকান। লরিতে ছিলেন তারকবাবুর ছোট ভাই গোপাল। প্রদীপবাবু তাঁর কাছে জানতে চান, ওখানে পাথরকুচি ফেলার বরাত কে দিয়েছে? তখনই ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। কী রকম?
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “গোপাল লরি থেকে নেমে প্রদীপকে গালিগালাজ করতে থাকে। মোবাইলে ফোন করে তারককে ডাকে। মোটরবাইকে চড়ে তারক চলে আসে, সঙ্গে আর এক ভাই কালু।” পুলিশ জানায়, কালু ও গোপাল মিলে প্রদীপকে পেটাতে থাকেন। আর তারকবাবু মোটরবাইকে রাখা একটা লোহার রড বার করে প্রদীপবাবুর মাথায় বাড়ি মারেন। প্রদীপবাবু রাস্তায় লুটিয়ে পড়ার পরেও তিনি রড দিয়ে অন্তত তিন-চার বার আঘাত করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন। তার পরে তিন জনই মোটর বাইকে চড়ে চলে যান।
গুরুতর জখম অবস্থায় প্রদীপবাবুকে বাইপাসের এক হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে প্রদীপবাবুর দাদা গোপালচন্দ্র ঘোষ পুলিশের কাছে তারক দাস ও তাঁর দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। যাদবপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিদ্যুৎ ও পরিকল্পনা রূপায়ণমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত এ দিন বলেন, “অত্যন্ত খারাপ ঘটনা। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”
আগের ক’টি মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তারকবাবু। ২৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়ার পরে তিনি ‘সংসারে আর্থিক অনটন’-এর কথা জানিয়ে সাসপেনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানান উপরওয়ালাদের। আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় বৃহস্পতিবারই তিনি মুচিপাড়া থানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.