সিদ্ধান্ত বার অ্যাসোসিয়েশনের
কর্মবিরতি অগ্রাহ্য, সিউড়িতে বহিষ্কার ১০ আইনজীবীকে
দাবি ছিল এই গরমে আদালতের কাজ সকালে করার। কিন্তু জেলা বিচারক ‘অনড়’। তাই দাবি পূরণের উদ্দেশ্যে চলছিল কর্মবিরতি। কিন্তু কর্মবিরতিকে অগ্রাহ্য করে আদালতে কাজ করার জন্য সিউড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন দশ জনকে বহিষ্কার করল।
গত ২৪ এপ্রিল থেকে বার অ্যাসোসিয়েশনের এই কর্মবিরতির জেরে আদালতের কাজ এমনিতেই চূড়ান্ত ভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। এ দিনের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের জেরে সিউড়ি আদালতের চলতি অচলাবস্থা আরও জটিল আকার নিল বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, অন্যান্য বেশ কয়েকটি জেলায় এই গরমে সকালে আদালতের কাজ চললেও এই জেলায় তা চালু করতে কী অসুবিধা?
সিউড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ২ তারিখ বৈঠক করে সংগঠনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জেলা বিচারকের কাছে অনুরোধ জানানো হবে গ্রীষ্মের কারণে এই মাসের ২৪ তারিখ থেকে সকালে আদালতের কাজকর্ম শুরু করা হোক। সেই অনুযায়ী ৪ এপ্রিল বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টও সকালে আদালত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য জেলা বিচারককে পরামর্শ দেয়।
ফাঁকা কোর্ট চত্বর। নিজস্ব চিত্র।
সংগঠনের সভাপতি গৌরহরি চন্দ বলেন, “জেলা বিচারক ১২ তারিখ চিঠি দিয়ে আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানতে চান। তার উত্তরে ১৭ তারিখ ফের চিঠি দিয়ে আমরা ২৪ তারিখ থেকে সকালে আদালতের কাজকর্ম করার অনুরোধ জানাই। কিন্তু জেলা বিচারক ২৩ তারিখ পর্যন্ত কোনওরকম সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানাননি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিই।” বিচারক দাবি না মানায় বার অ্যাসোসিয়েশন ২৪ এপ্রিল থেকে কর্মবিরতি পালন করছে।
কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশনের সেই সিদ্ধান্তকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়েই কয়েকজন আইনজীবী ২৪ তারিখ থেকেই আদালতে কাজকর্ম চালিয়ে যান। অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এরকম আইনজীবীর সংখ্যা ছিল ১৮। ঘটনা নজরে আসতেই বার অ্যাসোসিয়েশন তার পরেই সেই ১৮ জনকে শোকজের নোটিস পাঠায়। গৌরহরিবাবু বলেন, “তাঁদের মধ্যে ৮ জন ভুল বুঝতে পারেন এবং সন্তোষজনক উত্তর দেন। কিন্তু বাকি দশজন অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তকে কার্যত অমান্য করেছেন। তাঁদের উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার বহিষ্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।”
শুধু তাই নয়, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আইনজীবীরা তাঁদের দাবি মতো সকালে আদালত শুরু না করায় প্রতিবাদে জেলা বিচারকের আদালত চত্বরে মিছিল করেন। মিছিলে বিচারকের বদলির দাবিও ওঠে। গৌরহরিবাবু আরও বলেন, “অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জেলা বিচারক বদলি না হওয়া পর্যন্ত আদালতের কাজে যোগ দেওয়া চলবে না।”
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গৌরহরি চন্দ-এর দাবি, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া প্রভৃতি জেলাগুলিতে সকালে আদালত শুরু হচ্ছে। কিন্তু এই জেলা গ্রীষ্ম প্রধান হওয়া সত্ত্বেও বিচারক আমাদের আবেদন গ্রাহ্য করছেন না।” বিচারপ্রার্থী হাজার হাজার সাধারণ মানুষের কি এতে হয়রানি হবে না? গৌরহরিবাবু বলেন, “জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিচার চাইতে আসা সাধারণ মানুষের সুবিধা ও স্বার্থেই আমরা সকালে আদালত চালু করার দাবি জানিয়েছিলাম। এই সামান্য দাবি মানলে বিষয়টি এতদূর গড়াত না।”
অন্য দিকে, দশ বহিষ্কৃতদের অন্যতম তথা তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের জেলা সভাপতি সৈয়দ ফামিদুল আলম বলেন, “আমরা বার অ্যাসোসিয়েশনের বহিষ্কারের কোনও চিঠি এখনও হাতে পাইনি। হাতে বহিষ্কারের চিঠি পেলেই উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হব।” তাঁর দাবি, “অ্যাসোসিয়েশন এক্তিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” এই গরমে আদালত সকালে করার দাবিটি সঠিক মেনে নিয়েও তাঁর মত, “দাবি পূরণের জন্য সাধারণ মানুষকে অসিবিধায় ফেলে কোনও ভাবেই আদালতের কাজ ব্যাহত করা চলবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.