রেল প্রকল্পের ‘কৃতিত্ব’ কার, ‘লড়াই’ মুকুল-অভিজিতের
পুরভোটের মুখে বীরভূমের নালহাটির একটি রেল প্রকল্প নিয়ে শাসক জোট শিবিরে বিরোধ তুঙ্গে। যুযধান দু’পক্ষের একদিকে নলহাটির কংগ্রেস বিধায়ক ‘প্রণব-পুত্র’ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে ‘মমতা-ঘনিষ্ঠ’ রেলমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়।
বিধানসভা ভোটের পর নলহাটি পুরসভার কংগ্রেস চেয়ারম্যান বিপ্লব ওঝা-সহ ৯ জন কমিশনার তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্ক ‘তিক্ত’ হয়েছিলই। রেল প্রকল্পের শিলান্যাস ঘিরে তা আরও বেড়েছে। ফলে আসন্ন পুরভোটে জোট নিয়ে শাসক শিবিরে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পুরভোটে কোনও পক্ষই নিজেদের ‘রাজনৈতিক জমি’ যে এক ইঞ্চিও ছাড়তে নারাজ, রেলের অনুষ্ঠান নিয়ে ‘বিতর্ক’ থেকেই সে ইঙ্গিত মিলছে। পুরভোটের মুখে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জেলা বীরভূমের নলহাটিতে অভিজিৎবাবুকে সামনে রেখে কংগ্রেস যেমন জোটের বড় শরিককে ‘শিক্ষা’ দিতে তৈরি হচ্ছে, তেমনই কংগ্রেসকে পাল্টা ‘প্রত্যাঘাত’ করার জন্য তৈরি হচ্ছে তৃণমূলও। নলহাটি ও রামপুরহাটের মধ্যে করিমপুরে রেল লাইনের উপর একটি ‘রোড ওভারব্রিজ (আরওবি)’ এবং সংলগ্ন রাস্তা তৈরির কাজ অনুমোদন করেছে রেল মন্ত্রক। সেই প্রকল্পের শিলান্যাস করতে কাল, রবিবার মুকুলবাবুর নলহাটিতে যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। শাসক জোটের দু’পক্ষেরই দাবি, তাদেরই উদ্যোগে রেল মন্ত্রক প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। বিস্তারিত বলতে না-চাইলেও শুক্রবার অভিজিৎবাবু বলেন, “আমি বিধায়ক হওয়ার পর গত ৮ জুলাই ওই ‘আরওবি’ তৈরির আর্জি জানিয়ে তৎকালীন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীকে চিঠি দিয়েছিলাম। দীনেশবাবু সেই আর্জি অনুমোদন করা হয়েছে জানিয়ে ২৬ জুলাই আমায় চিঠি দিয়েছিলেন।’’ কিন্তু জেলা কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, এখন পুরভোটের আগে ওই প্রকল্প তাদের ‘সক্রিয় উদ্যোগে’ই অনুমোদিত হয়েছে বলে তৃণমূল প্রচার করছে। জেলা কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, “পুরভোটে জনসমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে তৃণমূল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ই ওই প্রচার করছে।”
অভিজিৎবাবুর দাবি উড়িয়ে দিয়ে মুকুলবাবু আবার বলেন, “এই প্রকল্প যখন অনুমোদন পায়, তখন প্রণববাবুর ছেলে রাজনীতিতেই আসেননি! ওটা আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই অনুমোদন দিয়েছিলেন। বাজেটেও অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য কাজটি করা সম্ভব হয়নি।” বর্তমান রেলমন্ত্রীর ব্যাখ্যা ওই প্রকল্পে রেলমন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগেই ‘আরওবি’ সংলগ্ন রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা। মুকুলবাবু বলেন, “এখন রাজ্যে পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তাই কাজটা শুরু হতে চলেছে।” মুকুলবাবুর বক্তব্যের সূত্র ধরে তৃণমূল নেতা তথা রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি করেন, “আমাদের দলের শতাব্দী রায় সাংসদ হওয়ার পর তিনি ওই প্রকল্প রূপায়নের জন্য রেল মন্ত্রকে আবেদন করেছিলেন। দিদি তাতে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অনুমোদন দেন।” অভিজিৎবাবু প্রকল্প অনুমোদনের ব্যাপারে মমতার ‘সহযোগিতা’র কথাও উল্লেখ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে নলহাটিতে জোট শিবিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। জেলা কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, রবিবার তাঁদের কর্মিসভা আছে নলহাটিতে। মুর্শিবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী সভার মূল বক্তা। তখনই রেল প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, “এটা রাজনৈতিক শিষ্টচার ও সৌজন্যবিরোধী।” জেলা কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত রেলের অনুষ্ঠানে আমাদের কোনও নেতাকে তো নয়ই, স্থানীয় বিধায়ক অভিজিৎবাবুকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি!”
এখন দেখার, রেলমন্ত্রী শিলান্যাস অনুষ্ঠানে গিয়ে কী বলেন এবং জন মাসের পুরভোটে নলহাটির ভোটে কোন পক্ষের ‘কৃতিত্ব’কে বৈধতা দেন ভোটাররা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.