কর্মীর অভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের ডালখোলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিতভাবে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন শূ্ন্য পদে কর্মী আধিকারিক নিয়োগের দাবি জানানো হলেও কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে কর্মী আধিকারিকের অভাবে একদিকে যেমন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনি বাসিন্দারা আবেদন করেও বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন না। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “রাজ্য সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখায় ডালখোলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে শূন্য পদে কর্মী আধিকারিক নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যার কথা রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে জানানো হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বামফ্রন্ট পরিচালিত ডালখোলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত বর্তমানে কর্মী-অফিসার মিলিয়ে মাত্র ৫ জন রয়েছেন। পঞ্চায়েতের মোট ৯ টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্টের দখলে ৫ টি ও কংগ্রেসের দখলে ৪ টি আসন রয়েছে। পঞ্চায়েতে মোট ১৬ হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। ৯০০ টি পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত। বিপিএল তালিকা ভুক্ত প্রায় ২৫০ জন বার্ধক্য ভাতা ও ১২০ জন বিধবা ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন। এ ছাড়াও ওই পঞ্চায়েতের বিপিএল তালিকাভূক্ত প্রায় ২৬০০ জন বাসিন্দার ১০০ দিনের প্রকল্পে জব কার্ড রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২ হাজার বাসিন্দা ২০১১-১২ আর্থিক বছরে ১০০ দিনের প্রকল্পে গড়ে ৩৯ দিন কাজ পেয়েছেন। মজুরি বাবদ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের খরচ হয়েছে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসরের পর নিয়োগ না হওয়ায় গত প্রায় ৮ বছর ধরে পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যসিস্ট্যান্ট পদটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। গত প্রায় ৪ মাস আগে সহায়ক পদে কর্মরত এক ব্যক্তির পদোন্নতি হয়। তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে যান। সেই থেকে ওই পদটিও শূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রায় দেড় বছর আগে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী অবসর নিয়েছেন। ওই পদেও কাউকে নিয়োগ করেনি জেলা প্রশাসন। এছাড়াও প্রায় দু বছর আগে পঞ্চায়েত সচিব পদ থেকে এক ব্যক্তি অবসর নিয়েছেন। পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, “বার বার জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানালেও কাজ হয়নি। শূন্য পদে কর্মী আধিকারিকদের নিয়োগ করা হয়নি। ফলে আমাদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে। বাসিন্দারাও আবেদন করে একাধিক সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন না।” তিনি জানান, কর্মী আধিকারিকের অভাবে পঞ্চায়েতের ৯ টি সংসদ এলাকায় গিয়ে ১০০ দিনের কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমণ্বয়ের অভাবে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পে এখনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। ফলে থমকে গিয়েছে বিপিএল নিয়ে সমীক্ষার কাজও। কয়েকমাস ধরে আবেদন করেও বিপিএল তালিকাভূক্ত ৩০০ জন বাসিন্দা বার্ধক্য ভাতা ও ২৫০ জন বাসিন্দা বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। করণদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির নির্দেশে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে সমীক্ষার কাজও আটকে গিয়েছে। করণদিঘি ব্লক কংগ্রেস নেতা সুভাষ গোস্বামী বলেন, “জেলা প্রশাসনের কাছে বহু বার এ বিষয়ে দাবি জানিয়েছি।” |