|
|
|
|
হলদিয়ায় পুঁজি জরুরি, মানেন পার্থও |
পেট্রোকেম বাঁচাতে চিন্তা আইওসি-র ভাগ বাড়ানোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হাতে খুব বেশি হলে দু’মাস। এর মধ্যে নতুন করে টাকা ঢালা না-হলে রাজ্যের ‘শো-পিস’ প্রকল্প হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্স-এর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দায় হবে। কারণ, নয়া পুঁজি না-এলে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান টাকা দেবে না। তাই হলদিয়ায় নতুন পুঁজি টানতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি)-কে ‘স্ট্র্যাটেজিক’ লগ্নিকারী হিসেবে আনার কথা ভাবছে রাজ্য।
হলদিয়া পেট্রোকেমে নয়া পুঁজির প্রয়োজনের কথা মেনে নিয়েছেন সংস্থার সাম্মানিক চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। যদিও তাঁর মতে, সংস্থা ঠিক ভাবে চালাতে শুধু বিনিয়োগ নয়, অন্য রসদও জরুরি। বুধবার তিনি বলেন, “পুঁজি দরকার। পাশাপাশি মানবসম্পদ ও সংস্থার সুষ্ঠু পরিচালনাও দরকার। কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা খুঁজে বার করাই মূল কাজ।” ২৮ এপ্রিল পার্থবাবু কারখানা পরিদর্শনে যাচ্ছেন।
হলদিয়া পেট্রোকেমে ইন্ডিয়ান অয়েলের উপস্থিতি অবশ্য আগে থেকেই রয়েছে। তবে তা ‘মাইনর’ অংশীদার হিসেবে। আপাতত হলদিয়ার ৮.৮৯% শেয়ার রয়েছে তাদের হাতে। রাজ্যের পূর্বতন বাম সরকারও ইন্ডিয়ান অয়েল-কে বড় বিনিয়োগকারী হিসেবে টানতে চেয়েছিল। কিন্তু ইন্ডিয়ান অয়েল-কে ২৬% মালিকানাদানের প্রবল বিরোধিতা করেছিল হলদিয়া পেট্রোকেমের অন্যতম প্রধান অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। ফলে ওই প্রয়াস ভেস্তে যায়।
আসন্ন সঙ্কটের মুখে ফের একই উদ্যোগ শুরু হয়েছে রাজ্যের নতুন সরকারের তরফে। শিল্পমহলের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রে সরকারকে অনেক দ্রুত কাজ সারতে হবে। উল্লেখ্য, হলদিয়া পেট্রো-রসায়ন প্রকল্পের মূল কাঁচামাল, অর্থাৎ ন্যাপথার অন্যতম জোগানদার আইওসি। বর্তমানে হলদিয়াকে তারা মোট প্রয়োজনের ২০% ন্যাপথা সরবরাহ করে, বাজারের দামে। তবে বেশি অংশীদারি পেলে তারা দামে কিছুটা ছাড় দিতে পারে
বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অন্য ‘আশঙ্কা’র
কথাও শোনা যাচ্ছে।
সেটা কী? সংস্থা সূত্রের খবর: বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘স্ট্র্যাটেজিক’ লগ্নিকারী হিসেবে যারা টাকা ঢালবে, তারা সংস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা চাইবে। সেই নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি পেতে ২৬ শতাংশের বেশি শেয়ার প্রয়োজন। এই বিষয়টিকে ঘিরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর নতুন করে মতবিরোধ দানা বাঁধতে পারে, আশঙ্কা শিল্পমহলের একাংশের।
চার বছর ধরে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্স লোকসানে চলছে। সব মিলিয়ে লোকসানের বহর প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই, আইসিআইসিআই, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন ঋণদাতা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে, সংস্থা পরিচালনায় সরকারের আরও সক্রিয় ভূমিকার পাশাপাশি নতুন পুঁজি আনা জরুরি। তাদের শর্ত মানতে হলে সংস্থার দুই প্রধান অংশীদার, অর্থাৎ চ্যাটার্জি গোষ্ঠী বা রাজ্য সরকারকে হলদিয়ায় টাকা ঢালতে হবে।
কত টাকা? ২০০৪-এ হিসেব কষে বলা হয়েছিল, হলদিয়া পেট্রোকেম বাঁচাতে ৩০০ কোটি টাকা দরকার। তার সংস্থান হলে ২:১ অনুপাতে ব্যাঙ্কগুলো ৬০০ কোটি টাকার ঋণ দিতে পারে। হলদিয়া পেট্রোকেমের এক কর্তা জানাচ্ছেন, আপাতত এই ৯০০ কোটি পেলে সামলে ওঠা যাবে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২০১৩-র মাঝামাঝি পেট্রোপণ্যের বাজার চাঙ্গা হবে। তত দিন কারখানা চালিয়ে যাওয়ার রসদ পেলে ঘুরে দাঁড়ানোটা খুব কঠিন হবে না বলে সংস্থা-সূত্রে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রবল এই আর্থিক সঙ্কটকালেও কিন্তু আইনি বিবাদের গেরো হলদিয়া পেট্রোকেমের পিছু ছাড়ছে না। গত মাসে সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে সাম্মানিক চেয়ারম্যান হিসেবে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিয়োগের দিনই এসেছে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন)-এর নোটিস। যেখানে বাদী চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। আর বিবাদী শিল্পোন্নয়ন নিগম, রাজ্য সরকার ও হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্স-কর্তৃপক্ষ। মামলার বিষয়: সংস্থার মূল মালিক কে।
মালিকানা ঘিরে বিতর্ক থাকলেও দু’পক্ষেরই অবশ্য দাবি, সংস্থার উন্নতির লক্ষ্যে হাত হাত মিলিয়ে কাজ করতে কোনও অসুবিধে নেই। পার্থবাবুও একাধিক বার জানিয়েছেন, রাজ্যের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই সংস্থার স্বাস্থ্যোদ্ধার করা হবে। সংস্থাটিকে লাভজনক করে তোলাটাই দু’পক্ষের প্রধান বিবেচ্য। আর সেই সূত্রেই হলদিয়া পেট্রোকেমের ১২৮ কোটি টাকার ঋণ শেয়ারে পরিণত করার অনুমোদন দিয়েছে পরিচালন পর্ষদ।
ফলে ঋণের বোঝা কিছুটা কমেছে, বেড়েছে নিট
সম্পদের পরিমাণ।
সংস্থার নিট সম্পদ ‘সর্বোচ্চ’ শিখরে উঠেছিল ২০০৮-এ, যার অঙ্ক ছিল ২৮৪৪ কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, নিট সম্পদ ‘সর্বোচ্চের’ ৫০ শতাংশের নীচে নেমে গেলেই বিআইএফআরে জানাতে হবে। এখনও পরিস্থিতি প্রায় সে দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু ১২৮ কোটি টাকার ঋণ শেয়ারে পরিণত করায় সেই পরিস্থিতি থেকে আপাতত রেহাই পেয়েছে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্স।
ইন্ডিয়ান অয়েল-কে বেশি শেয়ার দিয়ে নতুন পুঁজি টানতে রাজ্য কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার।
|
ফের মন্দার কবলে ব্রিটেন |
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
ফের মন্দার কবলে ব্রিটেন। এর আগেই সেই ইঙ্গিত মিললেও বুধবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান তাতে শিলমোহর দিল। ২০১২ সালের প্রথম তিন মাসে সরাসরি ০.২% কমলো জাতীয় আয়। যা ০.১% আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাসের সঙ্গে মেলেনি। প্রসঙ্গত। ২০১১-র শেষে জাতীয় আয় কমেছিল ০.৩%। নির্মাণ শিল্পে সঙ্কোচন, পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধি তলানিতে এসে ঠেকা এবং শিল্পোৎপাদন কমে যাওয়ায় কমেছে জাতীয় আয়। উল্লেখ্য, ২০০৮-’০৯ সালের মন্দায় ব্রিটেনের অর্থনীতির সঙ্কোচন ঘটে ৭.১ শতাংশ। |
|
|
|
|
|