ওষুধ কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হলেন হুগলির প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি এবং সিপিএম নেতা অসিত পাত্র।
মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ পুরশুড়া থানার জঙ্গলপাড়ার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই তাঁকে চুঁচুড়ায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “অসিতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তিনি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।” আজ, বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত বছর দল তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়। সাংগঠনিক ভাবেও তাঁর ডানা ছাঁটা হয়। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তের নির্দেশে অর্থমন্ত্রক তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু করে। শেষ পর্যন্ত জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজনের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
অসিতবাবু পর পর দু’বার জেলাসভাধিপতির দায়িত্ব পান। শুধু তাই নয়, জেলা সিপিএমে সাংগঠনিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তিনি। সভাধিপতি থাকাকালীন কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টেন্ডার ছাড়াই লক্ষ লক্ষ টাকার চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং ওষুধ কেনার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তদন্তে দেখা যায়, প্রয়োজন না থাকলেও জেলার হাসপাতালগুলিতে সরবরাহের কারণ দেখিয়ে ওই সব ওষুধপত্র ও চিকিৎসার সরঞ্জাম (ব্যান্ডেজ, তুলো) কেনা হয়েছিল। শুধু ওষুধপত্রই নয়, ভুয়ো প্রয়োজন দেখিয়ে রোগীদের জন্য তন্তুজ থেকে কেনা হয়েছিল প্রচুর মশারি। তদন্তে আরও জানা যায়, বিভিন্ন ওষুধ প্রস্ততকারক সংস্থার সঙ্গে আঁতাত করেই ওই সব ওষুধপত্র কেনা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে সরবরাহের জন্য ওষুধপত্র ও চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার জন্য যে ‘পারচেজ’ কমিটি ছিল, অসিতবাবু ছিলেন তার প্রধান। নিয়মিত সরবাহ ছাড়াও বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে (প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা, মহামারি) ওষুধ কেনার ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া ছিল তাঁকে। সেই সব ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি টাকা নয়ছয় করেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। |