জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজের সময় পাইপ ফেটে যাওয়ায় মালদহের কালিয়াচকের তিনটি ব্লকের বিস্তৃর্ণ এলাকায় তিনমাস ধরে আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে কালিয়াচকের (১, ২, ৩) ব্লকের এক লক্ষ ১০ হাজার মানুষ আর্সেনিকযুক্ত জল খেতে হচ্ছে। এতে কালিয়াচকে আর্সেনিকের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। গত এক মাসে ৩৫ জনের বেশি আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী তাঁর কাছে এসেছেন বলে দাবি করেছেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সমণ্বয়ের অভাবে মেরামতির কাজ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দক্ষিন মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। সাংসদ বলেন, “দুই দফতরের গাফিলতি এবং টালবাহানায় সাধারণ মানুষকে তিনমাস ধরে বিষ জল খেতে হচ্ছে। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের সময় পাইপ ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করা হলে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হত না। জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার বিষয়টি দেখার জন্য জেলাশাসককে বলেছি।” ইতিমধ্যে রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যান মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “দুই দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। সাত দিনের মধ্যে পাইপ মেরামত করে আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছি।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের সময় কালিয়াচকের ১৬ মাইল, সুলতানগঞ্জে কালিয়াচক কলেজের সামনে এবং বাখরপুরের কাছে পাইপ ফেটে গিয়েছে। এতে ১৬ মাইলে বিএসএফ ক্যাম্প, সুলতানগঞ্জের ১২টি গ্রাম ও বাখরপুরের ৭টি গ্রাম আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সাংসদ, মন্ত্রীরা যাই বলুন না কেন বিষয়টি নিয়ে যে টানাপোড়েন চলছে তা জাতীয় সড়ক এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বক্তব্যেই স্পষ্ট।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহম্মদ সাইফুল্লা বলেন, “কিছু জায়গায় আমরা পাইপ মেরামতি করেছি। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আমদেরকে সময়মত পাইপ ভেঙে যাওয়া এলাকাগুলি না জানালে আমরা কী করে কাজ করব?” আর জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নিতাই পদ ভাবক বলেন, “পাইপ মেরামত করার দায়িত্ব জাতীয় সড়ক কতৃপর্ক্ষ নিজেরাই নিয়েছে। আমরা কাজের তদারকি করছি। ওঁরা কাজ না করলে আমরা কী করতে পারি।” এমনকি, কোথায় কোথায় পাইপ ফেটে গিয়েছে তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দাবি। জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেন, “জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জলের পাইপ ফাটলে বা বিদ্যুতের লাইন কেটে গেলে তা দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। তার পরে জল সরবরাহ কেন বন্ধ রয়েছে তা দুই জন এডিএমকে দেখতে বলা হয়েছে।” |