গ্যাংটকের কলেজে বসে মৌলিক গবেষণায় দেশের নজড় কাড়ছেন শিক্ষক ভাস্কর চক্রবর্তী। আদতে শিলিগুড়ির মিলনপল্লির বাসিন্দা ভাস্করবাবু গ্যাংটকের সিকিম গভর্নমেন্ট কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান। তাঁর লেখা ‘গ্রিনার অ্যাপ্রোচ ইন অরগানিক কেমিস্ট্রি’ ইতিমধ্যেই ভারতের বিজ্ঞানী মহলে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। ভাস্করবাবুর ওই গবেষণালব্ধ বইটি পড়ে রীতিমতো স্বস্তিতে দেশের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীরা। মানুষের প্রয়োজনে লাগে এমন নানা বিষয়ে গবেষণাগারে কাজ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের রীতিমতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। ভাস্করবাবুর ওই নয়া বই নতুন পথের হদিশ দিয়েছে। ভাস্করবাবুর নিজের কথায়, “বেনজিন, টলুইনের মতো মাধ্যম দিয়ে দ্রবণ তৈরি করতে গিয়ে গবেষকদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার মতো ঝুঁকি নিতে হত। কিন্তু জলের মতো সাধারণ মাধ্যমকে ব্যবহার করেও যে গবেষণা করা সম্ভব সে কথাই বলতে চেয়েছি। দেশের গবেষকরা সে পথে এগোলে অন্তত ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে রেহাই পাবেন।” নাইট্রোন নিয়েও কাজ করছেন তিনি। দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের এক প্রত্যন্ত রাজ্যে বসে গবেষণায় এমন তাক লাগিয়ে দেওয়ার ফলও পেয়েছেন রসায়নের ওই শিক্ষক। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বসে মৌলিক গবেষণায় কৃতিত্বের সাক্ষর রাখায় গ্রোবাল সোসাইটি ফর হেলথ অ্যান্ড এডুকেশনাল গ্রোথ সংস্থার পক্ষ থেকে ‘ভারত শিক্ষা রত্ন’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে পুরস্কার প্রদানের ওই অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জপরি আয়োগের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-সহ অনেকেই ছিলেন। কেমিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি অব ইন্ডিয়া গত বছর তাঁকে ‘সেরা শিক্ষক’-এর সম্মান জানায়। তাঁর ৪৬টি প্রবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্তরের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর ‘গ্রিনার অ্যাপ্রোচ ইন অরগানিক কেমিস্ট্রি’ বইটি প্রকাশিত হয় ২০১১-র নভেম্বরে। ভাস্করবাবু বলেন, “কোথায় বসে কাজ করছি, সেটা বড় কথা নয়। কাজ করতে চাইলে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বসেই সম্ভব সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি। এই এলাকা থেকে যাতে আরও গবেষক উঠে আসেন সেই চেষ্টাও করছি।”সম্প্রতি সিকিম কলেজে ভাস্করবাবুর উদ্যোগে রসায়ন নিয়ে একটি আলোচনা সভা হয়। দেশের নানা প্রান্তের শিক্ষক, সিকিমের বেশ কিছু গবেষক অংশ নেন। ভাস্করবাবু জানান, এই ধরনের সভা সিকিমে এই প্রথম হল। |