গ্রাহক সেজে জাল নোট চক্রের সঙ্গে যুক্ত ৩ যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখা। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই কথা জানান দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল। তিনি জানান, ধৃতদের নাম মহতাব হোসেন, রিন্টু শেখ, বাপি শেখ। তাদের তিন জনেরই বাড়ি কালিয়াচকে। ধৃতদের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। এদিন তাদের শিলিগুড়ির আদালতে তোলা হয়। বিচারক পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “বিধাননগরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকত মহতাব। সে জাল নোটের প্রধান কারবারি বলে সন্দেহ হচ্ছে। বাকি দু’জন তার সহযোগী। পুরো বিষয়টি তদন্তের মধ্যে রয়েছে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহতাব প্রায় দুই মাস থেকে বিধাননগরের মুরলিগঞ্জে বাড়ি ভাড়া করে থাকত। সে বিধাননগর থেকে বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক সরবরাহের কাজ করত। সম্প্রতি দুনীতিদমন শাখা জানতে পারে, মহতাব জাল টাকার কারবারের সঙ্গে যুক্ত। দুর্নীতিদমন শাখার একটি দল তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সোমবার সন্ধ্যায় মুরলিগঞ্জে একটি হোটেলের কাছে জাল টাকা লেনদেন হবে বলে দু’পক্ষের মধ্যে ঠিক হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ১ লক্ষ জাল টাকার জন্য ৫৫ হাজার ভারতীয় টাকা দিতে হবে। দুর্নীতিদমন শাখার অফিসার নকুল দাস, সুকুমার ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে যায়। মহতাব ব্যাগ থেকে টাকা বের করতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। সেই সময় তার সঙ্গে রিন্টু এবং বাপি ছিল। তারা জাল টাকা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পৌঁছনোর কাজ করে। ধৃতের কাছ থেকে ৭০টি এক হাজার টাকার নোট এবং ৪০টি পাঁচশ টাকার নোট উদ্ধার হয়। ধৃতদের হয়ে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী সন্তোষ সাহা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মালদহের কালিয়াচককে কেন্দ্র করে জাল টাকার একটি চক্র উত্তরবঙ্গে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর আগে মালদহে জাল টাকার বেশ কয়েকজন কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। শিলিগুড়িতেও পুলিশের হাতে জাল টাকার কারবারি ধরা পড়ে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে কালিয়াচকের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, বাংলাদেশ থেকে জাল টাকা মালদহ হয়ে ভারতে ঢুকছে। এর পরই সেগুলি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মহতাবের সঙ্গে আরও কারা যুক্ত রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রয়োজনে মালদহ জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে কালিয়াচকে মহতাবের বাড়ির এলাকা শ্রীরামপুরে খোঁজ নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশ সুপার বলেন, “অন্তত পাঁচটি জায়গা দেখে সেগুলি যে জাল টাকা তা চিহ্নিত করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে তা চেনা অসম্ভব।” এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা। |