কংগ্রেস-তৃণমূল বিরোধ প্রকাশ্যে
ব্যবসায়ী গ্রেফতার ঘিরে কাজিয়া
ক প্লাস্টিক কারখানার মালিককে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে শিলিগুড়িতে কংগ্রেস-তৃণমূলের বিরোধ ফের প্রকাশ্যে এসেছে। ধৃত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে বাধা দিয়েছেন এবং শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতাকে গালিগালাজও করেছেন।
ওই বিবাদে কার্যত কংগ্রেসের ‘পাশে দাঁড়িয়ে’ শহরের ওই ‘প্রভাবশালী’ ব্যবসায়ীর হয়ে সওয়াল করছে সিপিএম-ও। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ী মহলের একটি বড় অংশ এখনও কংগ্রেস-সিপিএমের প্রতি ‘নরম মনোভাবাপন্ন’ বলেই তাঁদের হেনস্থা করে দলে টানতে তৃণমূল ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছেএই অভিযোগও উঠছে। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এই কাজিয়ায় মঙ্গলবার বেআইনি নির্মাণ ভাঙার অভিযানই থমকে যায়।
রতন বিহানি নামে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। রাত ১টা পর্যন্ত ব্যবসায়ীকে জামিনে ছাড়ানোর জন্য কংগ্রেস এবং সিপিএমের তরফে ‘তৎপরতা’ চলে। পুলিশ সূত্রের খবর, দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার তো বটেই, মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্ত, পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল, বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা, ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা অনুরোধ করলেও রাতে জামিন পাননি রতনবাবু।
ব্যবসায়ী রতন বিহানি
পুলিশেরই একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই রাতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও রতনবাবুকে থানা থেকেই জামিন দেওয়ার আর্জি জানান। পক্ষান্তরে, তৃণমূলের তরফে ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা ‘আইন আইনের পথে চলবে’ বলে জানিয়ে দেন। এ দিন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালও বলেন, “পুরসভার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে। তাতে থানা থেকে জামিন দেওয়ার অবকাশ ছিল না।” মঙ্গলবার শিলিগুড়ি আদালত অবশ্য ধৃত ব্যবসায়ীকে জামিন দেয়।
ঘটনাচক্রে এ দিন রতনবাবুর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী তথা প্রদেশ তৃণমূলের অন্যতম সহ-সভাপতি অরুণ সরকার। তাঁর বক্তব্য, “আইনজীবী হিসাবেই মামলা লড়েছি। এর সঙ্গে দলের যোগ নেই। দলের থেকে এ ব্যাপারে কোনও নির্দেশও ছিল না।” ছাড়া পাওয়ার পরে রতনবাবু জানান, হেনস্থার অভিযোগ এনে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি পরে বলেন, “অবৈধ নির্মাণ হলে ভাঙা হবে তা স্বাভাবিক। তা বলে আক্রোশের বশে রতনবাবুর মতো ব্যবসায়ীকে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। এ ভাবে ব্যবসায়ীদের ভয়
দেখিয়ে, চাপ দিয়ে কাছে টানা কিংবা কিছু আদায়ের চেষ্টা ঠিক নয়।” প্রায় একই যুক্তি দিয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। অশোকবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল নেতাদের একাংশের চাপেই পুলিশ ওই কাজ করছে। পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে দলভারী করার চেষ্টা করছে তৃণমূল।”
তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের অবশ্য দাবি, “শঙ্করবাবু সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। বড় বড় কথা বলছেন। উনি (শঙ্করবাবু) সোমবার রাতে আমাকে একাধিকবার ফোন করেন। আমি ধরিনি। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করে রতনবাবুর ব্যাপারটি দেখতে অনুরোধ করেন। আমি জানিয়ে দিই, আইন নিজের পথে চলবে। আমরা হস্তক্ষেপ করব না। শিলিগুড়ির মেয়রকেও আইন মেনে সব কাজ করার পরামর্শ দিই।”
পাশাপাশিই মন্ত্রীর বক্তব্য, “বেআইনি বাড়ি ভাঙার অভিযান শুরুর পরেই কেন পুরসভা থামিয়ে দিচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। আগেও অনেক বার এমন হয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইব।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানান, পর্যাপ্ত লোকবল না-থাকায় নিময়িত অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.