আইন বদলের উদ্যোগ, নিয়োগ আটকে কলেজে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নিয়ম মেনেই কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আরও একটি লিখিত পরীক্ষার ফল বেরিয়ে গেল মঙ্গলবার। কিন্তু নিয়োগ বন্ধ আছে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে। ইন্টারভিউ নিয়ে কবে নিয়োগ হবে, তারও হদিস দিতে পারছে না কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি)।
কমিশনের মাধ্যমে শেষ বার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল ২০০৮ সালে। তার পরে নানা কারণে কলেজে আর শিক্ষক নিয়োগ করা যায়নি। কলেজগুলিতে কত আসন ফাঁকা আছে, এখন তার একটি তালিকা তৈরি করছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু তা প্রস্তুত হওয়ার পরেও ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পেতে আরও কিছু মাস অপেক্ষা করতে হবে প্রার্থীদের। কারণ কলেজ সার্ভিস কমিশনের আইনে পরিবর্তন আনছে রাজ্য সরকার। পরিবর্তিত সেই আইন মেনে শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে, তা জানাতে পারছে না উচ্চশিক্ষা দফতর বা কলেজ সার্ভিস কমিশন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট (সেট)-এর ফল বেরিয়েছে। ওই পরীক্ষায় সাফল্যের হার ২.৬ শতাংশ। গত বছরের থেকে এক শতাংশ কম।
সেট-এর আয়োজন করা, তার ফলপ্রকাশ, নেট-সেটে সফল প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিয়ে কলেজে কলেজে নিয়োগ এগুলিই কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রধান কাজ। কিন্তু তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াই থমকে রয়েছে।
নবগঠিত সিদো-কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলি এখনও কলেজ সার্ভিস কমিশনের আওতাভুক্ত হয়নি। আইন পাল্টে ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে কমিশনের এক্তিয়ারে আনতে হবে। এ ছাড়া এখন কোনও প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলের জন্য আবেদন জানাতে পারেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রার্থীদের কাছে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজে শিক্ষকতার দরজা খুলে দিতে চাইছে কমিশন। অর্থাৎ কোচবিহারের বাসিন্দা কোনও প্রার্থী যাতে উত্তরবঙ্গ ছাড়াও কলকাতা, বর্ধমান, বিদ্যাসাগর বা রাজ্যের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে শিক্ষকতা করতে চেয়ে আবেদন জানাতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই আইন পরিবর্তন করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “কলেজগুলিতে ফাঁকা আসনের তালিকা তৈরির কাজ শেষের দিকে। কিন্তু কলেজ সার্ভিস কমিশনের আইন তো বদলানো হচ্ছে। তাই কমিশন কবে বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ শুরু করতে পারবে, সেটা এখনই বলা যাবে না।”
কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার অবশ্য আইন পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। মঙ্গলবার সেট-এর ফল প্রকাশ করে তিনি জানান, এ বছর সফল হয়েছেন ২৭৪ জন পরীক্ষার্থী। তাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাবেন। এ বার সেটে সাফল্যের হার ২.৬ শতাংশ। গত বার ওই হার ছিল ৩.৭৬ শতাংশ। এ বার জীববিদ্যা, অঙ্ক ও অর্থনীতিতে এক জনও সফল হতে পারেননি বলে জানান চেয়ারম্যান। পরীক্ষা হয়েছিল গত ১১ ডিসেম্বর। ১০ হাজার ৪৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৮০৩ জন প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে সফল হলেও তৃতীয় পত্রে বিষয়-ভিত্তিক বড় প্রশ্নে অনেকেই ভাল করতে পারেননি। |