‘নিজের পায়ে কোপ মেরে’ আজও জল-হীন মালিপাড়া
ছর বারো আগে পানীয় জলের নল বসিয়েছিল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। গ্রামের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন, এ বার ঘরে ঘরে পানীয় জল!
বছর কয়েক সে জল পেয়ে আশা হয়েছিল তাহলে পাকাপাকি ভাবে ঘুচল কাৎলামারি পঞ্চায়েতের দুর্দিন।
ঘুচেছিল কিন্তু সাময়িক, রানিনগরের ওই পঞ্চায়েতে গ্রামগুলি ‘নিজের পায়েই নিজেরাই কোপ মারল।’ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের স্থানীয় এক কর্তার আক্ষেপটা বোধহয় ভুল নয়। পাইপে পরিস্রুত জল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়ার মুখে শুরু হয়েছিল বেআইনি ‘হস্তক্ষেপ’। মূল পাইপ থেকে নিজের বাড়ির আঙিনায় জল টেনে নিতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই শুরু হয়েছিল ‘জল-চুরি’। ওই দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “ফলে কিছু দিনের মধ্যেই পাইপে আসা জলের চাপ কমতে শুরু করে। ফলে জল আসাই এক সময়ে বন্ধ হয়ে পড়ল।” বন্ধ হয়ে গেল পাইপে জল সরবরাহের স্বপ্ন। পড়ে থাকা নলগুলিতে এখন অজস্র পুরনো আগাছার ভিড়।
রানিনগরের মালিপাড়ায় পানীয় জল বলতে তাই দেড়-দু কিলোমিটার দূরের কল থেকে হলুদ লৌহ আকরিক বোঝাই নোংরা জল। বাসিন্দারা বলেন, “দেখলেই ভয় হয়!” তবে কাপড় কাচলেই হলুদ দাগ লেগে যায় যে জলে উপায় কী, তাই খেতে হয় চোখ বুজে! এলাকার যে সামান্য জল মেলে তা অবশ্য পান-যোগ্য নয়। কারণ? গ্রামবাসীরা বলছেন, “ও জলে আর্সেনিক আছে।” স্থানীয় কাৎলামারি পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের বিষ্ণুপ্রিয়া হালদার বলেন, “ব্লকের পক্ষ থেকে জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে দু-একটি গ্রাম ছাড়া এলাকার সব গ্রামের জলেই আর্সেনিক রয়েছে।”
কিন্তু তাঁদের পরিশুদ্ধ জলের স্বপ্ন থমকে যাওয়ার জন্য তো দায়ি স্থানীয় বাসিন্দারাই। মালপানা গ্রামের বাসিন্দা পুতুল সরকার বলেন, “সন্দেহ নাই আমরাই এ জন্য দায়ি। পরিশুদ্ধ জল আসবে বলে নল বসেছিল। কিন্তু তারপরেই ঘরে ঘরে জল নেওয়ার এমন হিড়িক পড়ে গেল যে অনেকেই জল পেতে বেআইনি পথে হাঁটল। ফলে জলের স্বপ্ন থমকে গেল।”
দিন কয়েক আগে স্থানীয় মহিলারা গিয়ে বিডিও-র কাছে জল পরিষেবা ফের চালু করার আবেদনও জানিয়েছিলেন। রানিনগর-২ বিডিও সৈকত গঙ্গোপাধ্যয় বলেন, “মহকুমাশাসকের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক হয়েছে ঠিকই, তবে স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা পঞ্চায়েতকে এ ব্যাপারে পাকা কথা দিতে হবে যে ফের কোনও অঘটন ঘটাবেন না গ্রামের বাসিন্দারা।”
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার বিকাশ সাহা বলেন, “গ্রামবাসীরা নিজেরাই নিজেদের পায়ে কোপ মেরেছেন। তবে আমরা ফের ওই এলাকায় কাজ শুরু করে দিয়েছি। চেষ্টা করা হচ্ছে পুরনো ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.