নিজস্ব সংবাদদাতা • সাহাগঞ্জ |
কারখানা খুলতে চেয়ে এবং নিজেদের ‘অবস্থান’ স্পষ্ট করে মঙ্গলবার তিনটি শ্রমিক সংগঠনকে চিঠি দিলেন ডানলপ কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠিতে ‘পর্যায়ক্রমে লোক নিয়ে’ কারখানার দরজা খোলার পাশাপাশি শ্রমিকদের পাওনা মেটাতে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যদিও ডান-বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি এই প্রস্তাবে ‘ভরসা’ রাখছেন না। বরং ২০ জন শ্রমিককে ‘আগাম অবসর’ এবং প্রায় ৩০০ শ্রমিককে অন্য কারখানায় পাঠানোর প্রস্তাবে তাঁরা কর্তৃপক্ষের ‘শ্রমিক স্বার্থবিরোধী’ অবস্থানই দেখছেন। শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন, “শ্রমিকেরা প্রস্তাব না মেনে নিলে জোর করে তো কিছু করা যাবে না! তবে কর্তৃপক্ষ শ্রম কমিশনারের কাছে চিঠির প্রতিলিপি পাঠান। তার পরে ত্রিপক্ষ বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।”
চিঠির বয়ান অনুযায়ী, আপাতত কারখানার তিনটি বিভাগই চালু করতে চান কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ধাপে পর্যায়ক্রমে শ্রমিকদের নিয়ে তাঁরা উৎপাদন চালু করতে চান। আপাতত মোট ৪৫৪ জন কর্মীকে কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। বাকি শ’তিনেক শ্রমিককে দেশের অন্যত্র রুইয়া-গোষ্ঠীর কারখানায় বদলি করা হবে। ২০ জনকে ‘আগাম অবসর’ নিতে বলা হয়েছে। ইআরএস (আর্লি রিটায়ারমেন্ট স্কিম) ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের বকেয়া প্রতিটি ক্ষেত্রে ২৫ লক্ষ টাকা করে প্রত্যেক মাসে কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করবেন বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ২৫ জন কর্মীর বিরুদ্ধে এক সময়ে ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ নেন। শ্রমিক সংগঠনগুলির চাপে ২০ জনকে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও বাকি ৫ জনকে কাজে নেওয়া হয়নি। তাঁদের মধ্যে দু’জন অবসর নেন। বাকি ৩ জনকে ফিরিয়ে না নেওয়ার প্রশ্নে অনড় কর্তৃপক্ষ।
আইএনটিটিইউসি-র হুগলি জেলা সভাপতি তথা ডানলপের শ্রমিক নেতা বিদ্যুৎ রাউত বলেন, “এই সমস্ত সিদ্ধান্তের কথা বহু দিন থেকে শুনে আসছি। ডানলপের মতো মুমূর্ষু কারখানাকে বাঁচাতে নতুন চিন্তা-ভাবনা, নতুন প্রস্তাবের প্রয়োজন। সত্যিকারের বাস্তবসম্মত কোনও প্রস্তাব এলেই আমরা ভাবনা-চিন্তা করতে পারি।” ডানলপের সিটু নেতা বিতান চৌধুরী বলেন, “অবাস্তব প্রস্তাব। বকেয়া টাকার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী। এ সব মানার প্রশ্নই নেই! আমরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছি।” আইএনটিইউসি নেতা তানাজি দাশগুপ্তও বলেন, “কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কিছু দিন আগে যে বৈঠক হয়েছিল, তার সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। কারখানা খুলতে সব সময়ই আগ্রহী। কিন্তু শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী বিষয় মেনে নেব না।” |