|
|
|
|
চৈত্র-শেষের বর্ষায় পাট কমছে ডুয়ার্সে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
চৈত্রের শেষে অতিবৃষ্টির কারণে কমতে চলেছে ডুয়ার্সে পাট চাষ। চৈত্র জুড়ে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। খেত শুকিয়ে ধুলো উড়েছে। অনেকে সময় মতো বীজ ফেলতে পারেনি। অবশেষে বৃষ্টি এল। কিন্তু এতটাই যে চাষের মাঠ জলে ভাসতে শুরু করে। যারা অনেক কষ্টে বীজ বোনার কাজ শেষ করেছিলেন তাঁরা উল্টে বিপাকে পড়ে যান। কয়েকদিনের টানা ঝড়বৃষ্টির কারণে জমিতে দাঁড়ানো জলে তলিয়ে যায় বীজ। গজানো চারা জলবন্দি হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন কৃষি আধিকারিকরা মনে করছেন বৃষ্টি থেমে একটানা রোদ শুরু না-হলে পাটের চাষ কমবে। মহকুমা কৃষি আধিকারিক হরিশ্চন্দ্র রায় বলেন, “বৃষ্টি না-থামলে সমস্যা হবে। অনেকে বীজ ফেলতে পারেনি। আগের বোনা বীজ জলে ডুবে নষ্ট হবে।” গত বছর জলপাইগুড়িতে জানুয়ারি মাস থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮৫.৫ মিমি। এ বার হয়েছে ২১০.৫ মিমি। গত বছর ১ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টি পাতের পরিমাণ ছিল ৫৫.৯ মিমি। এ বার বৃষ্টি হয়েছে ১৯৩.৩ মিমি। কৃষি আধিকারিকরা জানান, গত বছর গোটা এপ্রিল মাসে ১৮৭ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। এ বার মাসের মাঝামাঝিতে তা হয়েছে। চৈত্রের শেষ থেকে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে বদলে যেতে বসেছে চাষের মাঠের ছবি। পাটের বীজ বোনার পরে গরম আবহাওয়া দরকার। সেটা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মেলেনি। তাই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর জলপাইগুড়ি মহকুমায় ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। এ বার তেমনটাই প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বীজ বোনা সম্ভব হয়নি। যে জমিতে বীজ বোনা হয়েছিল তার অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। তাই কৃষি আধিকারিকদের আশঙ্কা এ বার পাট চাষের জমি অনেকটাই কমবে। চাষিরা মনে করছেন, যে জমিতে পাট দাঁড়িয়েছে সেখানেও উৎপাদন ভাল হবে না। মাধবডাঙ্গার সুরেন রায় বলেন, গত বছর হাল্কা বৃষ্টির জন্য বিঘা প্রতি জমি থেকে প্রায় ১০ মন পাট মিলেছে। এ বার বৃষ্টি অনেক বেশি তাই পাটের বৃদ্ধি কমবে। ফলে উৎপাদন কম হবে।” নষ্ট হয়ে যাওয়া জমি নতুন করে চাষ করে বীজ ছড়ানোরও উপায় নেই। কয়েকজন চাষি জানান, পাটের বীজ বোনার সময় শেষ হতে চলেছে। ভেজা জমি চাষ করে ফের তৈরি করতে সময় লাগবে। এর পরে বীজ ছড়ালে পাট ভাল হবে না। কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলার কমিটির সদস্য নির্মল চৌধুরী বলেন, “নানা এলাকা থেকে খবর এসেছে অনেকে বীজ বুনতে পারেনি। যারা বীজ বুনেছিলেন তাঁদের জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন নতুন করে জমি চাষ করে শুকিয়ে বীজ ফেলা সম্ভব হবে না।” |
|
|
|
|
|