অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পুরকর্মীদের বাধা দেওয়া ও ডেপুটি মেয়র-সহ মেয়র পারিষদদের গালি দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আলুপট্টিতে ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় ওই ব্যবসায়ী রতন বিহানির বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করেছে। এ দিন দোকান এবং গুদাম থাকা বাড়ির অবৈধ অংশ ভাঙতে গেলে ওই ব্যবসায়ী ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকিও দেন বলে পুলিশে অভিযোগ জানান পুরসভার আধিকারিকেরা। অভিযোগ, সে সময় উপস্থিত মেয়র পারিষদের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ‘চুরি-ডাকাতি করতে এসেছেন’ বলে অশালীন কথা বলা হয়, কাজে বাধা দেওয়া হয়। উপস্থিত পুলিশের সহায়তায় বাড়িতে ঢুকে দোতলার একাংশে টিনের চালা দিয়ে তৈরি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেন পুরকর্মীরা। |
পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা, ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা, পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল, সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত, সহকারী বাস্তুকার দীপক দত্ত-সহ অনেকেই। তাঁরা দোকানে ঢুকলে রতনবাবুর লোকেরা ভিডিও ফুটেজ তুলতে শুরু করলে নিষেধ করেন দেবশঙ্করবাবু। কথা না-শোনায় তিনি ছবি তোলা আটকাতে গেলে বচসা বাঁধে। রতনবাবু বলেন, “পুরকর্মীদের নিয়ে ডেপুটি মেয়র রঞ্জনবাবু এবং অন্যান্যরা দোকানে ঢুকে অবৈধ নির্মাণ রয়েছে বলে ভাঙতে চাইলে তাঁদের নোটিস দেখাতে বলি। বাধা বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। আমার অভিযোগ থাকলে, আইনের দ্বারস্থ হতে গেলে প্রমাণ দিতে হবে। তাই ছবি তুলে রাখছিলাম।” রতনবাবুর স্ত্রী প্রেমলতাদেবীর নামেই বাড়িটি। তাঁর অভিযোগ, “নোটিস না দিয়ে ভাঙতে এসেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তাঁরা।” রঞ্জনবাবু, কৃষ্ণবাবুদের অভিযোগ, “অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গেলে রতনবাবু বাধা দেন। হুমকি দিয়ে অশালীন কথা বলেন। সে জন্য পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।” |
পুরসভার সহকারী বাস্তুকার দীপক দত্ত জানান, ২০০৯ সালে নোটিস পাঠিয়ে অবৈধ নির্মাণের অংশ ভাঙতে বলা হয়েছিল। তখন ব্যবসায়ী লিখিতভাবে কিছু কারণ দেখালেও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। রতনবাবুর দাবি, ২০০২ সালে কেনা পুরনো বাড়িটির কোনও প্ল্যান ছিল না। তিনি বলেন, “বাড়িটি কিনে সংস্কার করেছি। অবৈধ ভাবে কিছু করিনি।” এ দিন ৬ নম্বর ওয়ার্ডেই হিলকার্ট রোডে এসএস মার্কেট কমপ্লেক্স ভবনের পিছনের অংশে অবৈধ নির্মাণ কাজ ভেঙে দেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম মতো পাঁচ তলা ওই ভবনের পিছনে ৫ মিটার অংশ ছাড়ার কথা। অথচ ওই অংশে পাঁচটি তলাতেই প্রায় ৭ হাজার বর্গফুট অবৈধ ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচ তলার ছাদেও নির্মাণ কাজ হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণের অংশ বিক্রিও করা হয়েছে। ভবনের মালিক বাদলকুমার সরকার বলেন, “আমারই ভুল হয়েছে। তা শুধরে নেব।” পুরসভার তরফে অবৈধ নির্মাণের একাংশ এ দিন ভেঙে দেওয়া হয়। বাকি অংশ এক মাসের মধ্যে মালিকপক্ষ ভেঙে দেবেন বলে লিখিত ভাবে এ দিন জানিয়েছেন। |