সেতু তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করা, রাস্তা মেরামাতি, নৌকা ভাড়া কমানো এমনই নানা দাবিতে সোমবার থেকে হিঙ্গলগঞ্জের কালীবাড়ি এলাকায় গণ-অনশন শুরু করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই কর্মসূচিতে শিক্ষক, শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শাসক দল তৃণমূল-সহ সামিল হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিও।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হলেও তাঁদের সমস্যাগুলির সমাধান হচ্ছে না। প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা বলেই তাঁরা অবহেলিত। তাঁরা জানান, দাবিগুলির ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালানোরও ‘হুমকি’ দিয়েছেন। হিঙ্গলগঞ্জ নাগরিক সমিতির সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষও ওই অনশনে সামিল হয়েছেন। |
তিনি বলেন, “উন্নয়নের প্রশ্নে আমরা সুন্দরবনবাসীরা সকলে এক। আমরা চাই, অবহেলা যেন বন্ধ হয়। এলাকার উন্নতি হয়।”
পার হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জের দুলদুলি পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তার বেশির ভাগটাই বেহাল। ওই রাস্তা দেখভাল করে পূর্ত এবং পূর্ত (সড়ক) দফতর। কিন্তু রাস্তা এখনও মেরামত হয়নি। তা ছাড়া, ২০০৬ সালে হাসনাবাদের কাটাখালি নদীর উপরে যে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল, তা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। কাটাখালি সেতুটি সংস্কারের দাবিও তুলেছেন গ্রামবাসীরা। ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় নৌকাভাড়া দিন কয়েক আগে ৫০ পয়সা বেড়েছে। এতে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন বলে দাবি সাধারণ মানুষের। এ সব কারণেই তাঁরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। এ দিন পার হাসনাবাদের কালীবাড়ি এলাকাতেও রাস্তায় গাছ পুঁতে অবরোধ-বিক্ষোভ হয়।
অনশনে সামিল দশম শ্রেণির ছাত্র আজগর আলি বলে, “সেতুর অভাবে বর্ষায় নৌকা পারাপার বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।” শিক্ষিকা কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “মেরামতির অভাবে রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে।” বিডিও ইন্দ্রকুমার নস্কর জানিয়েছেন, পার হাসনাবাদ থেকে দুলদুলি পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তাটির মোট ১৪ কিলোমিটারের দরপত্র আহ্বানের কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। বাকি রাস্তা সংস্কারেরও কাজও পরবর্তী সময়ে হবে। বিধায়ক সিপিআইয়ের আনন্দ মণ্ডল বলেন, “রাস্তা সংস্কার এবং অসমাপ্ত সেতুর কাজা শেষ করার জন্য বিধানসভায় আলোচনা করেছি। মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছি। নৌকাভাড়া নিয়ে বিডিওকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” |