প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুন্দরবনের গোসাবায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। তবে পুরো গোসাবায় নয়। সোমবার এই এলাকার কিছু বাসিন্দার বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আরও ৩০০ গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত।
এত দিন গোসাবা অঞ্চলে সমবায়ের মাধ্যমে প্রতিদিন ১১ ঘণ্টা করে প্রায় দেড় হাজার পরিবারকে গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ দেওয়া হত। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেটা অতি সামান্য। এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এ দিন প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের সোনাখালি থেকে বিদ্যুতের লাইন টেনে এনে কিছু পরিবারে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়। |
সেটাও যে খুব উন্নত মানের বিদ্যুৎ নয়, রাজ্যের বিদ্যুৎসচিব মলয় দে-র বক্তব্যেই তা পরিষ্কার। তিনি বলেন, “এখনই এই এলাকায় খুব উৎকৃষ্ট মানের বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে না। তবে এখানে একটি ৩৩ কেভি-র সাবস্টেশন তৈরির পরে গোসাবার প্রতিটি পরিবারে উৎকৃষ্ট মানের বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছানো যাবে।”
নতুন সরকার গ্রামীণ বিদ্যুদয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। রাজ্য সরকারের ‘তিন বছরে সকলের জন্য আলো’ নীতি অনুযায়ী সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন সব দ্বীপেও তিন বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা জানান। ওই নীতি রূপায়ণের জন্য এ বারের বাজেটে আগের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। মলয়বাবু জানান, সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
এ দিনই গোসাবায় ৩৩ কেভি সাবস্টেশনের শিলান্যাস করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এখানে বিদ্যুৎ আসার ফলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসার ঘটবে। তাতে এলাকার আর্থ-সামাজিক চেহারাটাই বদলে যাবে।” সুন্দরবন উন্নয়ন সংস্থাও এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল এ দিন বলেন, “সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ দফতরকে সব দিক থেকে সাহায্য করবে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ।” বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা জানান, বিদ্যুৎ-সংযোগ চেয়ে ইতিমধ্যেই প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এ দিনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী চৌধুরী মোহন জাটুয়াও উপস্থিত ছিলেন। |