মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর মাঠে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুণে ওয়ারিয়র্সের প্রতিপক্ষ কারা? রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু নাকি চেন্নাই সুপার কিংস? সারা দিন ধরে নানা ঘটনাপ্রবাহ দেখে গুলিয়ে গেল।
এমনিতে পুণে ওয়ারিয়র্সের বেঙ্গালুরু আগমন মানেই একটা বাড়তি স্পর্শকাতর জায়গা তৈরি হয়ে যাওয়া। সেই হোটেল। যেখানে এ বারের আইপিএল নিলাম বসেছিল আর বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঝামেলা হয়ে নিলাম বয়কট করে দিয়েছিল সুব্রত রায়ের সহারা। ভারতীয় ক্রিকেটের স্পনসরশিপ তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সৌরভকে মনে করানো মাত্র যেমন বললেন, “হ্যাঁ, সকালবেলায় উঠে বেরিয়ে গেলাম হোটেল থেকে!” পরে পুণে ওয়ারিয়র্স আইপিএল খেললেও বা সহারা ধোনিদের স্পনসর থেকে গেলেও একটা রেষারেষির জায়গা যেন থেকেই গিয়েছে। মার্লন স্যামুয়েলসের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বিতর্কের আগুনে আরও ঘি পড়ল। |
অধিনায়কের ভরসা এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। |
এ দিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে যা বলে গেলেন তা ভারত অধিনায়ক থাকার সময় তাঁকে করতে দেখা যেত। আগ্রাসী পাল্টা আক্রমণ। সৌরভ বললেন, “জানি না আমার এটা বলা উচিত কি না। কিন্তু যদি মার্লন স্যামুয়েলসের অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তা হলে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, এর থেকেও অনেক বেশি সন্দেহজনক অ্যাকশন নিয়ে আইপিএলে আরও অনেকে খেলছে। নিয়ম সবার ক্ষেত্রেই এক হওয়া উচিত। আশা করব বিচারকেরা ন্যায় বিচার করবেন।” এখানেই শেষ নয়। পুণে অধিনায়ক এর পর প্রশ্ন তুললেন, “স্যামুয়েলস আইপিএলে প্রথম তিনটে ম্যাচ খেলল। কোনও কথা উঠল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ও খেলে যাচ্ছে। কেউ রিপোর্ট করেনি। অথচ আইপিএলের চতুর্থ ম্যাচে এসে মনে হল স্যামুয়েলসের অ্যাকশন ঠিক নেই? নাকি ওকে গ্যালারিতে ফেলতে পারল না বলে এ রকম একটা অভিযোগ করে গেল?”
কারা অভিযোগ করে গেল তা তিনি নাম ধরে বললেন না। কিন্তু স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল খোঁচাটা চেন্নাই সুপার কিংসকে দিচ্ছেন। বোর্ড প্রেসিডেন্টের টিম বলে পুণে শিবিরে অনেকেরই মনে হচ্ছে, তাঁরাই স্যামুয়েলসের অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়ারদের উস্কেছেন। পুণের এক কর্তা যেমন বললেন, “আমরা বড় টিমকে হারিয়েছি তো। এ সব এখন একটু সহ্য করতে হবে।” পাল্টা কোনও প্রতিবাদ পুণে ওয়ারিয়র্স পাঠাচ্ছে না। কারণ সরকারি ভাবে স্যামুয়েলসের অ্যাকশন বৈধ নয় বলে তাদের কাছে কোনও বার্তা আইপিএল কমিটি পাঠায়নি। শুধু আম্পায়াররা তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছেন কয়েকটি নির্দিষ্ট ডেলিভারি নিয়ে। যেগুলোতে তাঁদের মনে হয়েছে, স্যামুয়েসল বৈধতা ভাঙছেন। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে আগেও একই অভিযোগ উঠেছে বলায় অবশ্য পুণে কর্তাটি বললেন, “আগের অভিযোগ দেখতে গেলে তো আইপিএলে অনেক বোলারকেই বাতিল করে দিতে হয়।”
সৌরভের গলায় একই সুর। “ভিডিও ক্লিপিং দেখতে হলে...কী আর বলব! তা হলে আইপিএলের অনেক বোলারকে...কী আর বলব!” পুরনো সেই তেজিয়ান ভারত অধিনায়কের কথা মনে পড়ে যেতে বাধ্য। যিনি পাকিস্তানে নেমে বলে দেবেন, “রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস কী করে থামাব? কী করে আবার? হ্যাঁচকা চেন টানব। থেমে যাবে।” এ দিন স্যামুয়েলসকে নিয়ে তাঁরা কী করবেন জিজ্ঞেস করায় যিনি বলে দিলেন, “কী করব আবার? প্রত্যেকটা ম্যাচ খেলবে। আর স্যামুয়েলসকে আমি বলেছি, যেমন জোরে জোরে বল করে যাচ্ছিস করে যা!” |