ইডেন বিপর্যয়ের চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না, ক্রিকেটারদের কথা বলার উপর ফতোয়া চাপিয়ে দিল কেকেআর কর্তৃপক্ষ।
টিমের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, একান্ত সাক্ষাৎকার তো নয়ই। এমনকী সাংবাদিকদের সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তাও চালাতে পারবেন না নাইট রাইডার্স ক্রিকেটাররা। আর এই নিষেধাজ্ঞা চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। অর্থাৎ, ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর মর্গ্যান হালফিলে যে রাস্তায় হাঁটছেন, কিংস ইলেভেন ম্যাচ হারার পর কেকেআরও সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে।
তবে ক্রিকেটারদের মুখ বন্ধ করা গেলেও নাইট কর্তৃপক্ষের একাংশের অগ্ন্যুৎপাত আটকানো যাচ্ছে না। বরং রবিবারের ইডেনে জঘন্য হারের পর টিমের হালচাল নিয়ে নানা অভিযোগপত্র জমা পড়ছে। একটা, দু’টো নয়। একেবারে পাঁচ দফা। যার মধ্যে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্ব হোক, কিংবা মনোবিদ রুডি ওয়েবস্টারের ক্লাসে টিমের সিনিয়রদের নিয়মিত গরহাজিরা, কোনও কিছুই বাদ যাচ্ছে না। অভিযোগগুলো ঠিক কী রকম? নীচে তুলে দেওয়া হল:
১) গম্ভীরের নেতৃত্বে সেই পরিচিত আগ্রাসন দেখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে, ঘরের মাঠে মাত্র ১৩৫ লক্ষ্য যখন, তখন কেন সেটা পনেরো ওভারের মধ্যে তুলে ফেলার নির্দেশ দেবেন না গম্ভীর? কেন রান তাড়া করার সময় ঢিলেঢালা মনোভাব দেখাবেন? দল নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বলা হচ্ছে, জয়দেব উনাদকট কোনও দিনই লো-বাউন্স উইকেটে স্বচ্ছন্দ নন। তবু তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হল সামি আহমেদকে বসিয়ে।
২) ইউসুফ পাঠানের ফর্ম। পাঁচ ম্যাচ হয়ে গেল, রান নেই ব্যাটে। রবিবার ম্যাচের পর যে ছক্কা হাঁকানোর প্রতিযোগিতা হয়েছে, সেখানেও ছ’টা বলে মারতে পেরেছেন মাত্র একটা ছয়! বলা হচ্ছে, স্টিভ স্মিথ বিদেশি ক্রিকেটার হয়ে পুণে-র জন্য যে দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছেন, সেখানে কেকেআরের সংসারে দু’বছর কাটিয়ে দেওয়ার পরেও কেন দেখাতে পারছেন না ইউসুফ?
৩) ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে কিংবদন্তি মনোবিদ রুডি ওয়েবস্টারকে। যিনি কি না ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারাদের মতো ক্রিকেটব্যক্তিত্বদের বিভিন্ন সময়ে ক্লাস নিয়েছেন। কিন্তু নাইট রাইডার্সের সিনিয়র ক্রিকেটাররা সে ভাবে পাত্তাই দিচ্ছেন না রুডির ক্লাসকে। যা নিয়ে রুডিও নাকি ক্ষুব্ধ। সোমবারও দেখা গেল, গোটা কেকেআর টিম যখন পঞ্জাবের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গিয়েছে, তখন রুডি পড়ে ইডেনে! ৫ ম্যাচে ৩ হার এমন বিপর্যয়ের পর যখন টিমের রুডিকে সবচেয়ে দরকার, তখনই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়নি টিমের সঙ্গে! গম্ভীরদের বদলে কাঠফাটা রোদে ইডেনে লক্ষ্মীরতন-সামি আহমেদদের সঙ্গে পড়ে রইলেন তিনি। লক্ষ্মীর চোট সারেনি এখনও।
৪) কোচ ট্রেভর বেইলিসের অস্ট্রেলীয় ঘরানার কোচিং কাজ করছে না সে ভাবে। বোলিং পরামর্শদাতা ওয়াসিম আক্রমের সঙ্গে তাঁর কোচিং পদ্ধতি আলাদা। অনেক সময়ই দেখা যাচ্ছে ক্রিকেটাররা বুঝে পাচ্ছেন না কার পদ্ধতি মেনে চলা উচিত।
৫) ম্যাচে খেলবেন কি খেলবেন না, সেটা ক্রিকেটাররা জানতে পারছেন শেষ মুহূর্তে। ম্যাচের দিন সকালে। ফলে প্রস্তুতি নিতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। রিজার্ভ বেঞ্চে যাঁরা বসছেন, তাঁরাও কেউ কেউ ক্ষুব্ধ এ ভাবে দু’টো-একটা ম্যাচ দেখেই তাঁদের বসিয়ে দেওয়া নিয়ে।
নাইট শিবির খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে মোহালির উইকেটে বাউন্স থাকার সম্ভাবনা। সেই কারণে গত দু’ম্যাচে ডাগ আউটে বসা ব্রেট লি কিংবা ডি’লাঞ্জকে খেলানো হতে পারে। এ দিকে, মঙ্গলবার ইডেনে আসছেন বোর্ডের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান বেঙ্কটসুন্দরম। ইডেনের পিচ নিয়ে কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে। |