নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যান্ডেল |
বাবার ‘বিবাহ বহির্ভূত’ সম্পর্কের প্রতিবাদ করে গুলিবিদ্ধ হলেন এক যুবক। অভিযোগ, গুলি চালিয়েছে বাবার ‘প্রেমিকা’র ভাই। ঘটনাস্থলে ওই মহিলার ছেলেও ছিল বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার রাতে হুগলির ব্যান্ডেল স্টেশন সংলগ্ন লালবাবা আশ্রমের কাছে ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যুবক নীতীশ পাসোয়ান চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ তাঁর বাবা উমাশঙ্কর পাসোয়ান ও বাবার ‘প্রেমিকা’ ধীরা পাসোয়ানকে গ্রেফতার করেছে। ধরা হয়েছে ওই মহিলার ছেলে অমিতকেও। মূল অভিযুক্ত ধীরার ভাই টিঙ্কু পলাতক। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অশেষ বিশ্বাস জানান, টিঙ্কুর খোঁজ চলছে। সোমবার ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক অমিতকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। উমাশঙ্কর ও ধীরাকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্যান্ডেলের নিউ কাজিডাঙ্গার বাসিন্দা উমাশঙ্করের স্ত্রী দুলারিদেবী অসুস্থ। ৭-৮ মাস আগে উমাশঙ্কর তাঁকে বিহারের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বছর চারেক ধরে স্থানীয় লোকোপাড়ার ধীরাদেবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেলের কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপের কর্মী উমাশঙ্করের। |
পুলিশের গাড়িতে ধৃতেরা। ছবি: তাপস ঘোষ |
তাঁর চার ছেলেমেয়ে এর প্রতিবাদ করায় তাঁদের সঙ্গে উমাশঙ্করের বনিবনা ছিল না। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ নীতীশ বাজারে গিয়েছিলেন। সেই সময় টিঙ্কু তাঁকে ফোন করে ব্যান্ডেল স্টেশনের কাছে আমবাগানে আসতে বলে। নীতীশ গিয়ে দেখেন, টিঙ্কু আর অমিত অপেক্ষা করছে। লালবাবা আশ্রমের কাছে নির্জন জায়গায় দু’পক্ষের তর্কাতর্কি হয়।
অভিযোগ, টিঙ্কু রিভলভারের বাঁট দিয়ে নীতীশের মাথায় মারে। তার পরে গুলি চালায়। নীতীশের বুকের বাঁ দিকে একটি গুলি লাগে। একটি গুলি কপাল ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। সোমবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নীতীশ বলেন, “আমি মরে গিয়েছি ভেবে ওরা গুলি চালাতে চালাতে পালায়।” রক্তাক্ত অবস্থায় নীতীশ ব্যান্ডেল আরপিএফ থানায় যান। সেখান থেকে তাঁকে জিআরপি থানায় যাওয়ার ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়। তখন তিনি ফোন করে ছোট ভাই বিশালকে ডাকেন। বিশাল স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে নীতীশকে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। রাতেই নীতীশের কাকা অরুণ পাসোয়ান চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উমাশঙ্কর, ধীরা, টিঙ্কু এবং অমিতের নামে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বছর আটত্রিশের ধীরাদেবীর চার মেয়ে, এক ছেলে। তাঁর স্বামীও বেশ অসুস্থ। উমাশঙ্করের ছেলেমেয়েরা ওই দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি জানালেও ধীরাদেবীর পরিবার মেনে নিয়েছিল। নীতীশের অভিযোগ, “ধীরাদেবী প্রায়ই বলতেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করিস না। তোকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেব’।” |