মাস দেড়েক আগে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে এক মাওবাদী শীর্ষ নেতা-সহ পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছিলেন। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে হানা দিয়ে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং অন্ধ্র পুলিশের গ্রেহাউন্ড বাহিনী সদানালা রামকৃষ্ণ, দীপক কুমার, সুকুমার মণ্ডল, বাপি মুদি ও শম্ভুচরণ পাল নামে পাঁচ মাওবাদী নেতাকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এবং নগদ প্রায় এক কোটি টাকা। ধৃতদের মধ্যে রামকৃষ্ণ মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান। কিষেণজির মৃত্যুর পরে এ রাজ্যে মাওবাদী সংগঠনের ভার তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বলে গোয়েন্দারা জানান।
কিন্তু কলকাতা পুলিশের হাত থেকে ওই তদন্তের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গেল কেন? এক গোয়েন্দা অফিসার জানান, যে-হেতু মাওবাদী সমস্যা শুধু একটি রাজ্যের নয়, তাই এই ধরনের ঘটনার তদন্ত সর্বভারতীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে থাকা সুবিধাজনক। বিশেষত, রামকৃষ্ণের মতো শীর্ষ স্তরের মাওবাদী নেতাকে জেরা করতে পারলে ভিন্ রাজ্যের মাওবাদীদের গ্রেফতার করতে সুবিধা হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবার দিল্লি থেকে এনআইএ-র একটি দল শহরে আসে। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের অফিসারদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন ওই দলের প্রতিনিধিরা। সেখানেই ওই মাওবাদী মামলার তদন্তভার হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা হয়। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (এসটিএফ) রাজীব মিশ্র জানান, এ দিনই ওই ঘটনা নিয়ে নতুন করে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। এসটিএফ সূত্রের খবর, কলকাতা এবং এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মাওবাদীদের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এনআইএ। সেই কারণেই ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে চেয়েছিল তারা। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ভিন্ রাজ্যের মাওবাদী নেতারা কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এসে ঘাঁটি তৈরি করছেন। রামকৃষ্ণ উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির অযোধ্যানগরের একটি আবাসনে কয়েক মাস ছিলেন। তাঁকে জেরা করে সেই ঘাঁটির সন্ধান পান গোয়েন্দারা। গত ৪ মার্চ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে রকেট লঞ্চার তৈরির যন্ত্রাংশ এবং মাওবাদী নথিপত্র উদ্ধার করে এসটিএফ। বালির একটি ঘাঁটিতেও অভিযান চালিয়ে নগদ কয়েক লক্ষ টাকা এবং মাওবাদী পুস্তিকা উদ্ধার করেন গোয়েন্দা অফিসারেরা। |