মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গে ‘আইনের শাসন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বিজ্ঞানী এবং চিন্তাবিদেরা।
|
নোয়াম চমস্কি |
নোনাডাঙা এবং ব্যঙ্গচিত্র-কাণ্ডে বিজ্ঞানী পার্থসারথি রায় ও অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে জাতীয়-আন্তর্জাতিক স্তরের প্রায় ৫০ জন বিজ্ঞানীর স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি গেল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে। চিঠিতে আমেরিকা, সুইডেন, সিঙ্গাপুর, ডেনমার্কের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নাম রয়েছে চিন্তাবিদ নোয়াম চমস্কি এবং জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অরুণা রায়েরও। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-সহ জাতীয় স্তরের বেশ কয়েকটি বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রও এই গ্রেফতারের ঘটনায় সরব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, আইনকে ‘ঢাল’ করে সাধারণ মানুষ ও সমাজকর্মীদের আন্দোলনের অধিকারে আঘাত করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নোনাডাঙায় যে ভাবে মূল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে ‘মিথ্যা অভিযোগে’ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইসার) সদস্য পার্থবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরোধী বলেও মত ওই বিজ্ঞানীদের। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “এ ভাবে তো স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, প্রতিবাদ করা যাবে না। সরকার তার আইন আর ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের মত প্রকাশেও লাগাম টানতে চাইছে। এর প্রভাব কিন্তু দেশের গণতন্ত্রেও পড়বে।” মুখ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র ‘ফরোয়ার্ড’ করার ‘অপরাধে’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক অম্বিকেশবাবুকে গ্রেফতারের ঘটনাতেও ক্ষুব্ধ চমস্কি-সহ বিজ্ঞানী-সমাজকর্মীরা। চিঠিতে পার্থসারথি রায়ের মুক্তির আবেদন জানানোর পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে দুটি ঘটনাই ব্যক্তিগত ভাবে খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
পার্থসারথি রায়ের মুক্তির দাবিতে বিজ্ঞানী, অধ্যাপক, শিক্ষক-সহ বিভিন্ন পেশার মানুষদের তরফে গত মঙ্গলবার যে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে, সেখানে সই করেছেন ভাটনগর পুরস্কার প্রাপ্ত বিজ্ঞানী সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। এমআইটি-র একটি সেন্টারের অধিকর্তা তথা রয়্যাল সোসাইটির ফেলো মৃগাঙ্ক শূর পার্থর মুক্তির দাবিতে চিঠি লিখেছেন ‘টু হুম ইট মে কনসার্ন’। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানানো হয়েছে, কোনও পুনর্বাসন ছাড়া সরকার বস্তি উচ্ছেদ করতে চাওয়ায় মানবিক ভাবেই গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন পার্থসারথি।
কিন্তু পুলিশ তাঁকে শুধু হেনস্থাই করেনি, ‘ভুয়ো’ মামলাও দায়ের করেছে। আইসার-এর বিজ্ঞানীরা পৃথক ভাবে আর একটি সই সংগ্রহ শুরু করেছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনকে দেওয়ার জন্য। |