তৃণমূলের মার মঙ্গলকোটে, কাটোয়ায় অবরোধে কংগ্রেস
স্কুল ভোট নিয়ে কর্মী বৈঠক চলছিল কংগ্রেসের। সেখানে চড়াও হয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের কর্মীদের মারধর করেছে বলে মঙ্গলকোটে অভিযোগ করল কংগ্রেস। ঘটনায় জড়িতদের ধরার দাবিতে ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ঘটনাস্থল থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কাটোয়ার ডাকবাংলো মোড়ে অবরোধ করে কংগ্রেস। পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৯ এপ্রিল মঙ্গলকোটের এ কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার। এ নিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলের কাছে একটি আমবাগানে ৬০-৭০ জন কর্মীকে নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছিল বলে কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্ব জানান। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময়ে ২৫-৩০ জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী লাঠি, গাছের ডাল নিয়ে চড়াও হয়।
ডাকবাংলো মোড়ে অবরোধ।
মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগে ব্লক কংগ্রেস নেতা শেখ বোরশেদ আলি ও জগদীশ দত্ত জানিয়েছেন, মাজিগ্রামের তৃণমূল নেতা বিকাশনারায়ণ চৌধুরী, মঙ্গলকোট গ্রামের সৈয়দ বসির ও বক্সিনগর গ্রামের লাটু শেখের নেতৃত্বে এই আক্রমণ হয়। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি দীননাথ পাল, স্থানীয় কংগ্রেস নেতা ক্ষুদিরাম মুখোপাধ্যায়ও প্রহৃত হন বলে অভিযোগ।
ব্লক কংগ্রেস সভাপতি দীননাথবাবু বলেন, “ওই স্কুলের ভোটে তৃণমূল আমাদের কোনও আসন ছাড়বে না বলে জেনেছি। তাই প্রার্থী ঠিক করার জন্য এ দিন বৈঠক হচ্ছিল।” তাঁর ক্ষোভ, “মঙ্গলকোট থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে আমাদের মারধর করা হল। থানায় বারবার খবর দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ এগিয়ে এল না।” প্রতিবাদে কাটোয়ার ডাকবাংলো মোড়ে অবরোধ করে কংগ্রেস। মঙ্গলকোট ছেড়ে কাটোয়ায় অবরোধ করতে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ব্লক কংগ্রেস নেতা জগদীশবাবু বলেন, “আমরা মঙ্গলকোটের নানা মোড়ে অবরোধ করতে পারতাম। কিন্তু তাতে মানুষজন বেশি অসুবিধায় পড়তেন। তাই ডাক বাংলো মোড়ে যাওয়া হয়।”
এই অবরোধের জেরে বর্ধমান-কাটোয়া ও ডাকবাংলো-নতুনহাট রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আটকে পড়ে বাস, লরি-সহ প্রচুর যানবাহন। প্রচণ্ড গরমে নাকাল হন বহু যাত্রী। অবরোধকারী কংগ্রেস কর্মী হিরা শেখ, নজরুল শেখদের অভিযোগ, “২৫-৩০ জন মিলে আমাদের মারধর করলেও দূরে আরও প্রায় শ’দেড়েক তৃণমূল সমর্থক দাঁড়িয়েছিল। সামান্য প্রতিবাদ করলেই আমাদের প্রাণ যেত।”
প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “বছর দেড়েক আগে মঙ্গলকোটের ধান্যরুখীতে সিপিএমের যে সব দুষ্কৃতীরা আমাদের ৯ জন বিধায়কের উপরে চড়াও হয়েছিল, তারাই এখন তৃণমূলের হয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের মারধর করছে।” এ দিন বর্ধমানে এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের লোকেরা নানা জায়গায় আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না। সিপিএম থেকে অনেকে এখন কংগ্রেসে আসতে চাইছে। আমরা তা হতে দিচ্ছি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমরা বারণ করেছিলাম, সিপিএম ছেড়ে আসা লোকজনকে যেন তৃণমূলে না নেওয়া হয়। কিন্তু দুষ্কৃতীরা সহজেই ওই দলে ঢুকে পড়ছে।” এ দিন পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিও জানান তিনি।
কংগ্রেসের এক জখম কর্মী।
মারধরের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের প্রদেশ কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মঙ্গলকোটের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, “কংগ্রেসই দুষ্কৃতীদের জড়ো করে বৈঠক করছিল। ওদের হামলায় আমাদের কয়েক জন জখম হয়। গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করতেই ওরা পালায়।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর আবার দাবি, “মঙ্গলকোটের মাটিতে কংগ্রেসের শক্তি কোথায়! তবু আমরা তাদের একটি আসন ছাড়ব বলেছিলাম। এ দিন কিছুই হয়নি, তা সত্ত্বেও ওরা চেঁচামেচি করছে।”
কাটোয়ার সার্কেল ইনস্পেক্টর শচীন্দ্রনাথ পুড়িয়া হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পুলিশ জানায়, পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

— নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.