উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
পুলিশের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের সঙ্গে সরব সিপিএমও
ত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদ নেতা তথা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রোনাল্ড দে-র বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করা নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের বিবাদ বেড়েই চলেছে। রোনাল্ড এখনও জেলে। তাঁর জামিন হয়নি। পক্ষান্তরে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা পঙ্কজ সিংহের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে সোমবার থেকে ধারাবাহিক মিটিং-মিছিল, বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস। বুধবার কংগ্রেস বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোনাল্ড মুক্তি না-পেলে শিলিগুড়িতে লাগাতার বন্ধ ডাকার হুমকি দেওয়া হয়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলতন্ত্র চালানোর অভিযোগ এনে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটি।
এ দিন সিপিএমের তরফে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেছেন, “তৃণমূল সর্বত্র দলতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছে।
ছাত্র পরিষদের নেতার মুক্তির দাবিতে কংগ্রেসের মিছিল।
রায়গঞ্জ ও মাজদিয়ার ঘটনায় তা প্রমাণিত হয়েছে। কলেজে হাঙ্গামার ঘটনায় রায়গঞ্জে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। অথচ মাজদিয়ায় মারপিটে অভিযুক্ত ছাত্রদের জেলে পাঠানো হয়েছে।” এর পরেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজুর সমালোচনা করেন জীবেশবাবু। তাঁর বক্তব্য, “একটা মারপিটের ঘটনায় দু’পক্ষ অভিযোগ করেছে। এক জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দেওয়া হল। অন্য জন তৃণমূল নেতা বলে লঘু ধারায় অভিযুক্ত করা হল। গ্রেফতারও করা হল না। আমরা ছাত্র সংসদের নেতাকে জেলে পাঠানোর ঘটনার নিন্দা করছি।”
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার অবশ্য সিপিএমের সমর্থনের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএমকে রাজ্যের মানুষ অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়েছেন। ওঁরা নিজেদের ভাবনা ভাবুক।”
শিলিগুড়িতে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের সাংবাদিক বৈঠক।
তবে এ দিনও সাংবাদিকদের কাছে ফের গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে কেন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তাঁরা তুলছেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন শঙ্করবাবু। তিনি জানান, কলেজ অনেক সময়ে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হতে পারে। সে জন্য উভয়পক্ষ অভিযোগ করলে পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে উভয়ের বিরুদ্ধে যে একই ব্যবস্থা নিয়ে থাকে তা তাঁরা অতীতে দেখেছেন। কিন্তু, রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মারপিটের পরে রোনাল্ড ও পঙ্কজ দু’জনেই থানায় অভিযোগ জানানোর পরে কেন পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করল, সেই প্রশ্নেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শঙ্করবাবু। তাঁর বক্তব্য, “আমরা জানতে পেরেছি, ওই রাতে পুলিশের দু’জন পদস্থ অফিসারকে টেলিফোনে হুমকি দিয়ে রোনাল্ডের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করতে বাধ্য করা হয়েছে।”
বস্তুত, একই মারপিটের ঘটনায় জড়িত দুই পক্ষের বিরুদ্ধে দু-ধরনের মামলা রুজু করা নিয়ে পুলিশের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি সঞ্জয় সিংহ অবশ্য বলেছেন, “আমরা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পেয়েছি। আমি ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যাপারে সকল পক্ষকে আশ্বস্ত করেছি।”
কংগ্রেসের তোলা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাই। পুলিশকে জানিয়ে দিই, কোনও রং না-দেখে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ দু’টি মামলা করেছে বলে শুনেছি। আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি। এর মধ্যে পক্ষপাতিত্ব কোথায়?”

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.