রাজ্য পঞ্চায়েতে ওবিসি মুসলিম সংরক্ষণও চায় |
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) মুসলিমদের জন্যও সংরক্ষণ চালু করবে রাজ্য। এই ব্যাপারে বাম জমানার শেষ দিকে বিল পাশ হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার এই নিয়ে নতুন বিল আনবে বলে বুধবার জানান পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
বিধানসভায় সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী আনিসুর রহমানের প্রশ্নের উত্তরে সুব্রতবাবু জানান, পঞ্চায়েতের ত্রিস্তর নির্বাচনে মহিলাদের জন্য ৫০% ও ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষণ চালু করতে রাজ্য নতুন করেই বিল আনবে। আনিসুরের বক্তব্য ছিল, আগের সরকার এই ব্যাপারে আইন তৈরি করেছে। তা চালু না-করে সরকার কেন আবার একই ধরনের আইনের কথা বলছে? মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, “আপনাদের আইন ভুলে ভরা। বেআইনি। তাতে সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি। আপনারা মহিলাদের জন্য ৫০% ও ওবিসি-দের সংরক্ষণের কথা বলেছেন। আমরা ওবিসি মুসলিমদেরও সংরক্ষণের আওতায় আনছি।” পরে পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, কোথাও-ই সংরক্ষণ ৫০%-এর বেশি হবে না। আগের সরকার যে আইন করেছে, তাতে মহিলাদের জন্য ৫০%-এর সঙ্গে তফসিলি জাতি-উপজাতি ও ওবিসি-দেরও সংরক্ষণ রয়েছে। ফলে সংরক্ষণ ৫০%-এর অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। তাই ওই সংরক্ষণ প্রস্তাবকে ‘বেআইনি’ বলছেন সুব্রতবাবু।
|
পাটের সহায়ক মূল্য বাড়লেও খুশি নয় কেউ |
অবশেষে পাটের সহায়ক মূল্য বাড়িয়ে কুইন্টাল প্রতি ২২০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে রাজ্যে কোনও পক্ষই খুশি নয়। রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, এই মূল্য ২৫০০ হওয়া উচিত ছিল। পাটচাষিরাও সে কথাই বলছেন। আবার চটকল মালিকদের কাছে এটি ‘অত্যধিক বৃদ্ধি’। ২০০০ টাকার বেশি এই বৃদ্ধি হলে সেটা চটকলেরই চাপ বাড়াবে। বস্ত্র মন্ত্রকের উপ-অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রঘুবীর সিংহ সম্প্রতি এক বার্তায় জানান, কেন্দ্র পাটের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২২০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর এই সহায়ক মূল্য ছিল ১৬৭৫ টাকা করে। গত অগস্টে উত্তরবঙ্গে সিপিএমের কৃষকসভা পাটের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবিতে পাট পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায়। তার পর থেকে সাত মাস লাগল বর্ধিত দামের ঘোষণা করতে। এর মধ্যে রাজ্য সরকার সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। কাঁচা পাট বিক্রির সময় চাষিদের ‘বোনাস’ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির পরে রাজ্য কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, এক কুইন্টাল পাট উৎপাদনের ‘ব্রেক-ইভন’ খরচ হচ্ছে ২৫০০ টাকা। তাঁর বক্তব্য, “পাটচাষিদের দুর্গতি উপলব্ধি করে মুখ্যমন্ত্রী অনেক আগেই কেন্দ্রের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে দাবি জানিয়েছিলেন।”
|
হকারনীতি নিয়ে কোর্টের নির্দেশ |
হকারনীতি তৈরি করতে রাজ্যকে ৮ সপ্তাহ সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০০৬ থেকেই হাইকোর্ট রাজ্যকে হকারনীতি তৈরি করতে বলছে। ২০০৯-এ তৈরি হয় কেন্দ্রীয় হকারনীতি। তার ভিত্তিতে ২০১০ সালে রাজ্য খসড়া হকারনীতি তৈরি করে। তা আদালতে জমা পড়েনি। বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দেয়, জাতীয় হকারনীতি অনুসরণ করে রাজ্যকে হকারনীতি তৈরি করতে হবে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা কলকাতা ও হাওড়ার যানজট সংক্রান্ত একটি মামলায় এ দিন শুনানি ছিল। সেখানেই সুভাষবাবু, রাজ্য সরকারের খসড়া হকারনীতির বিষয়টি তোলেন। তিনি অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রকে বলেন, রাজ্যের খসড়া হকারনীতি সরকারের ওয়েবসাইটেই পাওয়া যায়। ওই খসড়ার প্রতিলিপি অনিন্দ্যবাবুকে দেবেন বলেও জানান তিনি। রাজ্য সরকারের যে খসড়া হকারনীতি আছে, সেটা যথেষ্ট উন্নত বলেও মন্তব্য করেন সুভাষবাবু। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন কলকাতা ও হাওড়ার যানজট নিয়ন্ত্রণে একটি খসড়া রূপরেখা তৈরির জন্য দুই শহরের পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশ দেয়। ওই রূপরেখা ৬ সপ্তাহে আদালতে জমা দিতে হবে।
|
ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরিতে রাজ্যকে সাহায্য |
‘ডিজিটাল’ রেশন কার্ড বানাতে রাজ্যকে সম্পূর্ণ আর্থিক সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। আজ রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, ওই কাজের জন্য যে ২৯০ কোটি টাকা প্রয়োজন তা অবিলম্বে রাজ্যকে দেওয়া হবে। মন্ত্রক আশা করছে, যে ভাবে সারা দেশের মধ্যে কৃষকদের ধানের দাম চেকে মিটিয়ে নজির সৃষ্টি করছে পশ্চিমবঙ্গ, তেমনই ‘ডিজিটাল’ রেশন কার্ড চালু হলে রাজ্যে রেশন ব্যবস্থায় যে দুর্নীতি রয়েছে তা অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যে এক কোটিরও বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গোটা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ডিজিটাল রেশন কার্ড বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল সরকার। প্রকল্প রূপায়ণে অর্থ সাহায্য চেয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। |