সনিয়াকে চিঠি পরিষদীয় দলের
মান্নানের জয় ‘নিশ্চিত’ কি, প্রশ্ন হাইকম্যান্ডের
রাজ্যসভার ভোটের ময়দান থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটেয় প্রার্থী প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হবে। তার ২৪ ঘণ্টা আগে বুধবার কংগ্রেস শিবির থেকেই প্রার্থী প্রত্যাহারের সম্ভাবনার কথা ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্য কংগ্রেসের একাংশের ধারণা, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ বজায় রাখতেই হাইকম্যান্ড প্রার্থী প্রত্যাহারের কথা ভাবছে। তবে কংগ্রেস পরিষদীয় দল প্রার্থী দিতে চায়। তারা সেই মর্মে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠিও লিখেছে। তাদের বক্তব্য, এখন সরে এলে দলের কর্মী-সমর্থকদের ‘মনোবল’ ভেঙে যাবে।
কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল মান্নানকে জেতানোর মতো যথেষ্ট ‘আত্মবিশ্বাস’ (জেতার মতো বিধায়ক) কংগ্রেস পরিষদীয় দলের রয়েছে কি না, এ দিন সকালে তা জানতে চায় হাইকম্যান্ড। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মান্নানের জয় ‘নিশ্চিত’ কি না, তা কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবকে ফোন করে জানতে চান পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ। প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করা উচিত, না ভোটে লড়া উচিত, সে ব্যাপারে পরিষদীয় দলের মতামত জানতে চান তিনি। দলের অন্দরে আলোচনার পর মান্নান ‘সর্বোচ্চ’ কত ভোট পেতে পারেন, তা জানিয়ে এবং প্রার্থী প্রত্যাহার না-করার আর্জি জানিয়ে বিধানসভা থেকেই ফ্যাক্সে সনিয়ার উদ্দেশে চিঠি পাঠান সোহরাব। তবে সনিয়ার নাম করে পাঠালেও চিঠিটি পাঠানো হয় শাকিলকেই।
রাজ্যসভার ভোট নিয়ে দিল্লিতে এ দিন দফায় দফায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, শাকিল, রামচন্দ্র কুন্তিয়া, আহমেদ পটেল ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতো নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। এর পরেই রাজ্য কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরে জল্পনা শুরু হয়। তাঁকে নিয়ে দলের ভিতরে ‘টানাপোড়েনে’ অস্বস্তিতে পড়েন মান্নানও। এ দিন বিধানসভায় দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা সেরে প্রদেশ দফতরে যাওয়ার আগে মান্নান তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মমতার সঙ্গে দেখা করার জন্য শাকিল তাঁকে বলেছিলেন। মান্নান তাঁর প্রস্তাবে সায় দেননি। বরং শাকিলকে পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, দরকার হলে শাকিল যেন তাঁকে সঙ্গে নিয়ে কালীঘাটে মমতার বাড়ি যান। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, প্রার্থিপদ প্রত্যাহার না-করার জন্য এ দিন আহমেদ পটেলের কাছে এক দূত মারফত মান্নান আর্জি জানিয়েছিলেন। পটেল তাঁকে জানান, বিষয়টি প্রণববাবুই দেখছেন। তবে প্রকাশ্যে মান্নান বলেন, “আমায় কেউ কিছু জানাননি। এআইসিসি আমায় প্রার্থী হতে বলেছিল। এখন তারা নাম প্রত্যাহার করতে বললে তুলে নেব।”
রবিবার কংগ্রেস হাইকম্যান্ড রাজ্যসভায় প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সোমবার মনোনয়ন জমা দেন মান্নান। দলের একাধিক শীর্ষ নেতা জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। প্রকাশ্যে তাঁরা জানানও সে কথা। ভোটের অঙ্ক স্থির করতে এবং ভোট ‘নষ্ট’ না-হওয়া নিয়ে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করারও সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। তার পরে হঠাৎ কেন হাওয়াবদল?
সমর্থনের জন্য জোট শরিক মমতার শরণাপন্ন হওয়ার প্রস্তাবেও নেতৃত্বের ‘আত্মবিশ্বাস’ নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্ন ওঠে। শাকিল অবশ্য বলেন, “প্রার্থী প্রত্যাহারের কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি। আমাদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করার ব্যাপারে ঠিক কতগুলি ভোট দরকার এবং সেই প্রয়োজনীয় সংখ্যা আমাদের আছে কি না, তা নিয়ে প্রণববাবুর বাড়িতে আলোচনায় বসেছিলাম। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি।” প্রদীপবাবুও বলেন, “কে বলেছে প্রার্থী প্রত্যাহার করছি! আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি।”
কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বিভিন্ন সদস্য মারফত জানা গিয়েছে, হাইকম্যান্ডকে লেখা সোহরাবের চিঠিতে বলা হয়েছে, তৃণমূল চার জন প্রার্থী দিয়েছে। বামফ্রন্ট এক জন প্রার্থী দিয়েছে। বামেদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। তৃণমূলেরও তিন প্রার্থীর জয় অনেকটাই নিশ্চিত। তবে চতুর্থ জনের ক্ষেত্রে বিধায়ক রয়েছেন ৩৯ জন। কংগ্রেসের ৪৩ (এক জন নির্দল বিধায়ক ধরে)। বামেদের প্রার্থীকে জেতানোর পরেও যে অতিরিক্ত ভোট থাকছে, সেই ভোট কংগ্রেস প্রার্থী মান্নানের পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বামেদের ভোট নিয়ে জেতা ‘উচিত’ হবে কি না, সে ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিন। সেই সিদ্ধান্ত পরিষদীয় দল মেনে নেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.