রাতে কার্ফুর প্রস্তাব সীমান্তে, নাকচ করে দিল বাংলাদেশ
নিরীহ মানুষের মৃত্যু রুখতে সীমান্তে ‘নৈশ কার্ফু’ জারি করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিএসএফ। বাংলাদেশ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে। তবে সীমান্ত বরাবর ২৩টি এলাকাকে ‘অপরাধপ্রবণ’ চিহ্নিত করে সেখানে যৌথ নজরদারির বিষয়ে রাজি হয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবি (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড)।
বিএসএফের গুলিতে নিরীহ বাংলাদেশিদের মৃত্যু নিয়ে সাম্প্রতিক কালে বহুবার সরব হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। কিছু দিন আগে দু’দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও এ বিষয়ে সরব হন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। দু’দেশই মনে করে, এই জাতীয় অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো জরুরি। এবং সেই লক্ষ্যেই বিএসএফ-বিজিবি-র বৈঠক বসেছিল দিল্লিতে।
চার দিনের বৈঠকে ভারতের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, রাতে সীমান্ত বরাবর কার্ফু চালু করা হোক। তাতে শুধু বেআইনি পারাপারই নয়, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানকারী, দুষ্কৃতী বা জঙ্গিদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা যেত। কিন্তু বিএসএফের ডিজি-র ওই প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডিজি (বিজিবি) আনোয়ার হুসেন। তাঁর বক্তব্য, “আমরা কার্ফুতে বিশ্বাস করি না। আমাদের মত, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিজেদের দেশের এলাকায় স্বাধীন ভাবে ঘোরাফেরা করার স্বাধীনতা রয়েছে। কার্ফু হল একটা স্বল্পমেয়াদি প্রক্রিয়া। এতে কোনও সমস্যার সমাধান হবে না।” তার বদলে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে চোরাচালানের মতো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে না পড়েন বা প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া সীমান্ত পারাপার করার চেষ্টা না করেন, সে দিকে জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন হুসেন।
বৈঠকে বিএসএফ কর্তারা জানান, গত কয়েক মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট কমে এসেছে। বাংলাদেশের দাবি, এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। নীতিগত ভাবে বিএসএফ তার সঙ্গে একমত। যে কারণে ভারতের তরফে যতটা সম্ভব সংযত থাকা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফকে রবার বুলেট ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, এর ফলে চোরাচালানকারীরা অকুতোভয় হয়ে বিএসএফ জওয়ানদের উপরেই হামলা চালাচ্ছে। সেই জন্যই রাতে কার্ফু জারির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে ও পারেও কার্ফু কার্যকর করতে হত। কিন্তু বাংলাদেশ সেই দায় নিতে রাজি হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে এখন থেকে কোম্পানি কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হবে। চোরাচালান এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আরও বেশি করে তথ্য বিনিময় হবে। চোরাচালানকারীদের ছবি, ধৃতদের জেরা করার রিপোর্টও দেওয়া হবে পরস্পরকে। দিল্লির কাছে তথ্য রয়েছে, বাংলাদেশে এখনও উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গি সংগঠনগুলির ৫১টি প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। সেই সব শিবিরের তালিকা ছাড়াও বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা ২১ জন ভারতীয় জঙ্গির তালিকাও বিজিবি-কে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। ডিজি (বিজিবি) বলেন, “আমরা আশ্বাস দিচ্ছি, বাংলাদেশের জমি ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের কাজে ব্যবহার হতে দেওয়া হবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.