জন্মভিটেয় ভাগ হয়ে গেলেন ভাষা শহিদ
নিজের জন্মভিটেয় ‘দ্বিখণ্ডিত’ ভাষা শহিদ!
মুর্শিদাবাদের বাবলা গ্রামে ভাষা শহিদ আবুল বরকতের আদি বাড়ির উঠোনেই মঙ্গলবার মঞ্চ বেঁধেছিল কংগ্রেস এবং সিপিএম। সোমবার যুযুধান দুই গোষ্ঠীই অনুষ্ঠান শুরু করেছিল একই সময়ে, রাত ১২টা ১ মিনিটে। তার পর থেকে দুই মঞ্চে বক্তাদের বিষয়, দেশাত্মবোধক গান, আবৃত্তি, এমনকী মশাল মিছিলেও ছিল স্পষ্ট চাপানউতোরের ইশারা।
বাধ্য হয়ে পঞ্চাশ গজ ব্যবধানে দুই মঞ্চের মাইক শুধু বিপরীত মুখে ঘুরিয়ে দিতে পেরেছিল স্থানীয় প্রশাসন। বাকিটা বাস্তবিকই হট্টমেলার দেশ। কারণ ভাষা দিবস জুড়ে দুই ‘প্রতিপক্ষের’ তারস্বরে ক্রমান্বয়ে বেজে চলা গান কিংবা ভাষণ, শ্রোতাদের কানে বিশেষ পৌঁছয়নি!
তবে, দু-পক্ষের কেউই সে কথা অবশ্য মানতে চাননি। বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে ভাষা শহিদ স্মরণের এই দৃষ্টিকটু দলবাজি নিয়েও কোনও হেলদোল চোখে পড়েনি দু-পক্ষের কর্তাদের মধ্যে। উল্টে, অস্বস্তিতে পড়েছেন অতিথিরাই। জেলা কংগ্রেস নিয়ন্ত্রিত ‘শহিদ আবুল বরকত স্মৃতি সংঘ’-এর মঞ্চ থেকে প্রবাসী বিজ্ঞানী অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় কিংবা সিপিএমের দখলে থাকা ‘শহিদ আবুল বরকত কেন্দ্র’-এর মঞ্চে বাংলাদেশের দুই অতিথি শাহজাহান শাহ ও তারিকুজ্জামানও এ-সব দেখে তাঁদের বিরক্তি আড়াল করেননি।
‘বরকত স্মৃতি সংঘ’-এর মঞ্চে অরবিন্দবাবু ছাড়াও ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী। ছিলেন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী-সহ কংগ্রেসের অন্য তিন বিধায়কও। অন্য দিকে, ‘বরকত কেন্দ্র’-এর মঞ্চে শাহজাহান ও তারিকুজ্জামান ছাড়াও ছিলেন সিটুর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক তুষার দে, জেলা পরিষদের প্রাক্তন ও বর্তমান দুই সভাধিপতি যথাক্রমে সচ্চিদানন্দ কাণ্ডারি ও পূর্ণিমা দাস, স্থানীয় বিধায়ক আরএসপি’র ঈদ মহম্মদ।
আয়োজকদের দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে কসুর করেননি। ‘বরকত কেন্দ্র’-এর সহ-সম্পাদক তথা সিপিএমের ভরতপুর-সালার জোনাল কমিটির নেতা গোলাম মওলা বলেন, “রাস্তার মাঝে ইচ্ছা করে ‘বরকত স্মৃতি সংঘ’-এর লোকজন গাড়ি রেখে দেওয়ায় বাংলাদেশের অতিথিদের নিয়ে বাবলা গ্রামে ঢুকতেই পারছিলাম না।” কংগ্রেস নেতা তথা ‘বরকত স্মৃতি সংঘ’-এর সম্পাদক সৈয়দ সিয়াদত আলি পাল্টা বলছেন, “আমাদের সভায় লোকসমাগম দেখে হিংসা থেকে এ-সব রটাচ্ছেন ওঁরা।”
১৯৯৬ সালে বরকতের জন্মভিটে ওই গ্রামে ভাষা দিবস উদযাপনের শুরু। তবে সে সময়ে একটাই অনুষ্ঠান হত। ২০০৩ সালে তৎকালীন ভাষা দিবস উদযাপন কমিটির বিভাজনের পর থেকেই দ্বিখণ্ডিত হয়ে গিয়েছেন ভাষা শহিদ। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.