সচিত্র পোস্টারে সুচিত্রাদের প্রতি ‘আত্মসমর্পণের’ বার্তা
বি-সহ পোস্টার সাঁটিয়ে জঙ্গলমহলের সাত মাওবাদী নেতা-নেত্রীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাল প্রশাসন। এঁদের মধ্যে আছেন সুচিত্রা মাহাতোগত ২৪ নভেম্বর জামবনির বুড়িশোলে কিষেণজি নিহত হওয়ার পর থেকেই যাঁর ‘গতিবিধি’ রহস্যে ঘেরা। সুচিত্রার পাশাপাশিই সিপিআই (মাওবাদী)-র রাজ্য সম্পাদক অসীম মণ্ডল ওরফে আকাশ, লালগড়ে মাওবাদী সক্রিয়তার অন্যতম ‘প্রধান মুখ’ মনসারাম হেমব্রম ওরফে সিংরাই ওরফে বিকাশ, তাঁর স্ত্রী তারা, মদন মাহাতো, রঞ্জন মুন্ডা, জয়ন্ত-র ছবি সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়ে শুক্রবার থেকে ঝাড়গ্রাম-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে প্রচার শুরু করেছে পুলিশ।
সুচিত্রা মাহাতো
পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সফরে গিয়ে বন্দুক ছেড়ে ‘মূলস্রোতে’ ফিরতে মাওবাদীদের প্রতি একাধিকবার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাগরী বাস্কের মতো শীর্ষ নেত্রী-সহ বেশ কয়েক জন মাওবাদী ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণও করেছেন। বাম-আমলেও মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট কয়েক জনের প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে তাঁদের ছবি-সহ পোস্টার-প্রচার আগে হয়নি। এই মাওবাদী নেতা-নেত্রীরা যাতে পুলিশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন, সে জন্য একটি মোবাইল নম্বরও (৭৪০৭০৯১১২২) দেওয়া হয়েছে পোস্টারে।
পুলিশ-প্রশাসনের এই ‘অভিনব’ উদ্যোগ ঘিরে প্রশ্নও উঠছে। নির্দিষ্ট কয়েক জনের নামেই কেন পোস্টারএ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কোনও কোনও মহল এই সংশয়ও প্রকাশ করছে যে, পুলিশ কি ইতিমধ্যেই ‘নিজেদের হেফাজতে নেওয়া’ একাধিক মাওবাদী নেতা-নেত্রীকে আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দিতেই এই ‘পরিকল্পনা’ নিয়েছে। এ দিন ছোটন দাস-সহ বন্দিমুক্তি কমিটির কিছু নেতা বেলপাহাড়ি যান গত রবিবার সেখানকার মধুপুর এলাকায় যৌথ বাহিনীর গুলিতে ‘সন্দেহভাজন মাওবাদী’ যুধিষ্ঠির মাহাতোর নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত করতে।

আকাশ

বিকাশ

তারা
কিছু দিন আগে পর্যন্তও মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা কমিটির অন্যতম সদস্য থাকা ছোটনবাবুর বক্তব্য, “এর আগে মহাকরণে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জাগরী বাস্কের আত্মসমর্পণ সাজানো কি না, সে নিয়ে সংশয় আছেই। এই পোস্টার-কাণ্ডেও মনে হচ্ছে, একাধিক মাওবাদী নেতা-নেত্রীকে আগেই ধরে এখন আত্মসমর্পণের গল্প সাজাতে চাওয়া হচ্ছে।” যুধিষ্ঠিরকে ‘ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যা’ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে ওই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তও দাবি করেছে বন্দিমুক্তি কমিটি।
পোস্টার ঘিরে ‘সংশয়’ বাড়িয়েছে আরও একটি বিষয়। বিকাশের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী তারা-র নামেও সচিত্র পোস্টারে আত্মসমর্পণের ‘আহ্বান’ জানানো হয়েছে। কিন্তু মদন মাহাতোর নাম-ছবি থাকলেও তাঁর মাওবাদী নেত্রী স্ত্রী জবা-র নামে পোস্টার সাঁটানো হয়নি। তা হলে কি জবা ‘অধরা’ বলেই সচিত্র পোস্টারে বাদ পড়লেনপ্রশ্ন সেটাই। শিলদা-কাণ্ড সহ একাধিক খুন-নাশকতা-হামলার মামলা এবং রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত হয়ে পরোয়ানার মুখে থাকা এই মাওবাদীদের না ধরে আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে কেনকোনও কোনও মহল সে প্রশ্নও তুলেছে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, “গ্রেফতারের চেয়ে ‘আত্মসমর্পণ’ করালে অন্তত ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’-এ জেতা যায়।”

মদন মাহাতো

রঞ্জন মুন্ডা

জয়ন্ত
ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার গৌরব শর্মারও বক্তব্য, “রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই পুলিশের পক্ষ থেকে ফেরার কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ মাওবাদীর প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে পোস্টার দেওয়া হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.