প্রশাসনের আশ্বাসের পরেও ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জঞ্জাল ফেলতে বাধা পেয়ে ক্ষুব্ধ পুরসভা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার আবর্জনা বোঝাই ৪টি ট্রাক কোতোয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেয়। এদিন সকালে পুরসভার জঞ্জালবাহী ট্রাক শহর লাগোয়া পাঙ্গা এলাকার জঞ্জাল ফেলতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। ট্রাকের চালক সহ কর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বাধ্য হয়েই আবর্জনা বোঝাই ট্রাক নিয়ে শহরে ফেরেন পুরকর্মীরা। চলতি বছরের শুরুতেই ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়। পুরসভা জঞ্জাল ফেলতে না পারায় তিনদিন ধরে শহরের বিভিন্ন মোড়ের ভ্যাট উপচে পড়তে থাকে। শহরের পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে পড়ে। গত মাসেই প্রশাসন, পুরসভা এবং পাঙ্গার বাসিন্দাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আগামী চার মাস পাঙ্গায় জঞ্জাল ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ততদিনে বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য পুরসভাকে অন্যত্র জমি দেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ হয়ে যাবে বলে প্রশাসন লিখিত ভাবে জানিয়ে দেয়। |
প্রশাসনের বৈঠকে সহমত হলেও, পরবর্তীতে পাঙ্গার বাসিন্দারা তা মানবেন না বলে জানিয়ে দেন। বৃহস্পতিবারেও ফের জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে বাধা পান। ক্ষুব্ধ পুর কর্তৃপক্ষ ট্রাকগুলিকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মত এদিন সকালে থানার সামনে রাস্তায় পরপর চারটি ট্রাক দাড়িয়ে যায়। থানার আইসি টেলিফোন করে সদর মহকুমা শাসককে ঘটনাটি জানান। প্রশাসনের থেকে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করে রফাসূত্র বার করার শ্বাস দিলে থানার সামনে থেকে ট্রাকগুলি সরিয়ে নেয় পুরসভা। পরে প্রশাসনের চুক্তি খেলাপ করার অভিযোগে পাঙ্গার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পুর কর্তৃপক্ষ। এদিনের ঘটনার পরে ফের শহরের আবর্জনা ফেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জলপাইগুড়ির সদর মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “গত ৬ জানুয়ারী বৈঠকে ঐকমত্য হয়। তার পরে ফের অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছে। এদিন পুরসভার থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জমিও দ্রুত হস্তান্তর হয়ে যাবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকি সেনগুপ্ত বলেন, “সরকারি স্তরে চুক্তি হওয়ার পরেও একাংশ বাসিন্দা চুক্তির খেলাপ করছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য, পরিষ্কার নয়। ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ময়লা ফেলতে না পারলে শহরের রাস্তাতেই আবর্জনা জমিয়ে রাখা ছাড়া অন্য উপায় নেই।” পাঙ্গার প্রায় ৭ একর জমি নিয়ে তৈরি পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পুরসভা আবর্জনা ফেলে। ধীরে ধীরে ডাম্পিং গ্রাউন্ড লাগোয়া এলাকায় বসতি গড়ে ওঠে। দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জঞ্জাল ফেলার প্রতিবাদ শুরু করেন বাসিন্দারা। পাঙ্গার দূষণ বিরোধী কমিটির সভাপতি শুকদেব সরকার বলেন, “প্রশাসনের বৈঠকে আমরা বলেছিলাম এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে মতামত জানাব। এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রস্তাবে রাজি হননি। তাই পুরসভাকে আমরা আর ময়লা ফেলতে দেব না।” |