তছরুপে অভিযুক্ত ব্যাঙ্ককর্তা, আর্জি আগাম জামিনের
টাকা তছরুপ ও আমানতকারীদের প্রতারণা-সহ বিভিন্ন বেআইনি কাজে অভিযুক্ত জেলার এক সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তা ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে ধরেও ছেড়ে দিয়েছিল বর্ধমান থানা। অথচ আউশগ্রাম থানায় জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা থাকায় তিনি জেলা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। আজ, শুক্রবার সেই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৯৯৯ সালে ভাস্করবাবুর বিরুদ্ধে বর্ধমান ও বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। শুধু বর্ধমান থানাতেই সাতটি অভিযোগ হয়। এর মধ্যে একটি মামলার শুনানি থাকায় গত ১১ জানুয়ারি তিনি বর্ধমান আদালতে যান। আদালত চত্বর থেকে বের হতেই পুলিশ তাঁকে ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরে তৎকালীন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “উনি কোনও মামলায় জামিন নেননি কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যই ওঁকে আটক করা হয়েছিল। দেখা যায়, তেমন কোনও মামলা নেই। তাই কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
অথচ তার দু’দিনের মধ্যে, ১৩ জানুয়ারি ভাস্করবাবু জেলা জজ আদালতের শরণাপন্ন হন। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর আউশগ্রাম থানায় রুজু হওয়া ১২৮ নম্বর মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানান তিনি। সেই আবেদনে ভাস্করবাবু জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময়ে বর্ধমান থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাগুলিতে চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। তিনি নিয়মিত জেলার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলালের এজলাসে হাজিরা দিচ্ছেন।
ভাস্করবাবু তাঁর আবেদনে আরও জানিয়েছেন, গত ১১ জানুয়ারি পুলিশ তাঁকে আটক করে বর্ধমান থানায় নিয়ে গেলেও শেষমেশ বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়। আউশগ্রাম থানায় ১৯৯৯ সালের ১২৮ নম্বর মামলাটির কথা তিনি পরে জানতে পারেন। পুলিশ তাঁকে ওই মামলায় অভিযুক্ত দেখিয়ে চার্জশিটও দিয়েছে।
চেষ্টা করেও এ দিন ভাস্করবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর আইনজীবী সোমা মুখোপাধ্যায় ১১ জানুয়ারি পুলিশের বিরুদ্ধে ভাস্করবাবুকে ‘অকারণে হয়রান’ করার অভিযোগ জানিয়েছিলেন আদালতে। তাঁর দাবি, “সত্যিই আমরা ওই মামলাটির বিষয়ে জানতাম না। আমার মক্কেল, প্রণবানন্দ সমবায় ব্যাঙ্কের সিইও ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ও জানতেন না। মামলাটির কথা জানা মাত্র আমরা আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছি।”
আউশগ্রাম থানার আইসি সুভাষ মহান্তির মতে, “পুলিশ মামলায় চার্জশিট দিলে উনি আগাম জামিন চাইতে পারেন না। ওঁকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। তবে এই ব্যাপারে আদালতের কোনও নথি এখনও আমাদের কাছে আসেনি।” জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর সুব্রত হাটি বলেন, “ভাস্করবাবুর বিরুদ্ধে আউশগ্রাম থানায় ১৯৯৯ সালের একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা ছিল। তিনি তাতেই আগাম জামিন চেয়েছেন। আউশগ্রাম থানা মামলার নথিপত্র আমার কাছে পাঠিয়েছে। সরকারের তরফে এই আবেদনের বিরোধিতা করে সওয়াল করা হবে।” জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি বিশ্বজিৎ দাসের দাবি, “জামিনঅযোগ্য ধারা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কী করে ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে ছেড়ে দিয়েছিল, তার তদন্ত হওয়া উচিত। যেহেতু আউশগ্রাম থানা ওই মামলার চার্জশিট দিয়েছে, তাই এই ঘটনার কথা জেলা পুলিশের জানা উচিত ছিল। পুলিশ কার নির্দেশে ওঁকে আটক করল, কার নির্দেশে বা ছাড়ল, তা নিয়েও তদন্ত হওয়া দরকার।” প্রাক্তন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, “আমরা প্রচুর চেষ্টাও করে ওই মামলার কথা জানতে পারিনি। মামলায় জামিন নেননি বলেই পুলিশ ওঁকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল। কিছু না পেয়েই ওঁকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.