মালদহের শিশুবিভাগে ঘুরছে বেড়াল
হাসপাতাল ঘুরে ক্ষোভ সাবিত্রীর
কের পর শিশু মৃত্যুর পরেও মালদহ জেলা সদর হাসপাতাল ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের যে হুঁশ ফেরেনি তা নিজের চোখে দেখলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। শিশু মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে রবিবার দুপুরে সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে ঢুকে এক গাদা বেড়াল দেখে আঁতকে ওঠেন তিনি। সেগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরে ওই ওয়ার্ডের বেহাল, নোংরা ও চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলের (শিশু বিভাগ) রাজত্বে ঢুকে পড়েছিলাম। যা দেখলাম ভয়াবহ। ওয়ার্ডে বড় বড় বেড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওগুলো ওয়ার্ডে ভর্তি শিশুদের চেয়েও বড়। আমারও ওই বেড়াল দেখে ভয় হচ্ছিল। আমিই শিশু বিভাগ থেকে বেড়াল তাড়িয়েছি। হচ্ছেটা কী! গোটা শিশু বিভাগ নোংরায় ভরে গিয়েছে। চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে অসুস্থ শিশুদের রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকারে বারবার হুঁশিয়ারির পরেও মালদহ সদর হাসপাতালের কর্তাদের হুঁশ ফেরেনি।” তাঁর অভিযোগ, এ দিন তিনি হাসপাতালের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখেন এক জন ছাড়া কোনও স্বাস্থ্যকর্তা নেই। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনও জেলা হাসপাতালে ৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে সাবিত্রী দেবী হাসপাতাল পরিদর্শনের সময়ই একটি শিশুর মৃত্যু হয়। ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিংশুক বিশ্বাস বলেন, “মন্ত্রীর নির্দেশে শিশু বিভাগ থেকে বেড়াল তাড়ানো ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিশু বিভাগ পরিষ্কার করা হচ্ছে।” তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০টি শিশু ভর্তি হচ্ছে। শিশু বিভাগের ৯০টি বেডে প্রায় ২৫০ শিশুর চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের শিশু বিভাগ ঘুরে যখন সাবিত্রী দেবী বার হওয়ার সময়ে জরুরি বিভাগের সামনে তাঁর গাড়ি আটকে দেন কালিয়াচকের করারিচাঁদপুরে লিয়াকত আলি। তাঁর অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার তাঁর মেয়ে ফতেজা হাসপাতালে ভর্তি হতে এলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, গর্ভস্থ শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। লিয়াকত বলেন, “শনিবার নার্সিংহোমে মেয়ে একটি সুস্থ বাচ্চা প্রসব করেছে। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাই।” নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তখনই ঘটনার তদন্তের নিদের্শ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “মন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই মহিলার বেড টিকিট এনে খতিয়ে দেখা হচ্ছে কোনও চিকিৎসক ওই মহিলাকে আদৌ এমন কিছু বলে ছিলেন কি না। সত্যিই এমন কিছু ঘটে থাকলে ওই চিকিৎসক শাস্তি পাবেন।” জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে তদন্তের রিপোর্ট দ্রুত তাঁর কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সাবিত্রী দেবী বলেন, মহিলার পেটে সুস্থ বাচ্চা আছে অথচ এক জন চিকিৎসক কী ভাবে বলল তাঁর পেটের বাচ্চা মারা গিয়েছে? যিনি এই কথা বলেছেন সেই ডাক্তারকে চিহ্নিত করতে বলেছি। তাঁকে ছাড়া হবে না। এই সমস্ত চিকিৎসকদের জন্য সরকারের বদনাম হচ্ছে।” হাসপাতালের শিশুদের দুইটি বিভাগে উপচে পড়া ভিড় দেখে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা আইসিসিইউ ওয়ার্ডটি খুলে সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুদের স্থানান্তর করার নিদের্শ দিয়েছেন নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। বন্ধ থাকা আইসিসিইউ ওয়ার্ড কী অবস্থায় রয়েছে তা দেখতে চেয়ে ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করার পরেও চাবি না মেলায় সেই ওয়ার্ডে ঢুকতে পারেননি তিনি। সাবিত্রী মিত্র বলেন, “মালদহের সমস্ত ডাক্তারের ছুটি বন্ধ করা হয়েছে। এর পরেও যদি কোনও ডাক্তার ছুটিতে চলে যান তবে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ থেকে সদর হাসপাতালে শিশুবিভাগে ২৪ ঘণ্টা শিশু বিশেষজ্ঞ থাকবেন। কোনও চিকিৎসকে কল বুক পাঠানো হবে না। যদি কল বুক দিয়ে চিকিৎসকদের হাসপাতালে আনতে হয় তবে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.