সকালে গরম পুরি তরকারি। দুপুরে গরম ভাত, ডাল, বেগুনি আর পনিরের তরকারি। সঙ্গে পায়েস। তারই ফাঁকে হাতে নখ, চুল, দাড়ি কেটে কলপও করে দিলেন কালচিনি হ্যামিলটনগঞ্জ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও কালচিনি প্রবীন নাগরিক সমিতির সদস্যদের ভাড়া করা ক্ষৌরকার। ওই দুই সমিতির উদ্যোগে রবিবার সকালে ডুয়ার্সের বাসরা নদীর পাড়ে এলাকার কয়েকশো ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধবৃদ্ধাদের জন্য অভিনব এই পিকনিকের আয়োজন করা হয়। শীতের কুয়াশা মোড়া সকালে বাসরা নদী পাড়ের ঝাউবনে এমন অভিনব পিকনিককে ঘিরে এলাকায় উৎসবের মেজাজ তৈরি হয়। বনভোজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালচিনির বিডিও থেনডুপ শেরপা, কালচিনি থানার ওসি রিংচেন লামা ভুটিয়া, মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অভিজিৎ নার্জিনারি, দলসিংপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত উপ প্রধান শম্ভু জয়সওয়াল-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পিকনিকের ফাঁকেই বৃদ্ধরা কালচিনির বিডিওর হাতে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে বার্ধক্য ভাতা এবং বিপিএল তালিকা সংশোধনের দাবিও জানান। কালচিনির বিডিও বলেন, “প্রবীণ মানুষদের নিয়ে এমন বনভোজনের উদ্যোগ ভাল। বৃদ্ধরা বনভোজনের ফাঁকে বার্ধক্য ভাতা ও বিপিএল তালিকা নিয়ে আমায় স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁদের বলেছি, গ্রাম পঞ্চায়েতে বৃদ্ধদের ভাতা ও বিপিএল তালিকা নিয়ে যে সব সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা হবে।” |
কালচিনি হ্যামিলটনগঞ্জ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “বৃদ্ধবৃদ্ধারা বয়সের সঙ্গে নিজেদের মনের ইচ্ছেকে চেপে রাখার চেষ্টা করেন। অনেক সামর্থ্য না থাকার জন্য পিকনিকে যেতে পারেন না। সে সব মাথায় রেখে গত সাত বছর ধরে ব্লকের বিভিন্ন এলাকার প্রবীন নাগরিকদের নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করা হচ্ছে।” পিকনিকে সমস্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে সামিল করার জন্য এদিন সকাল ৭টার মধ্যে ব্লকের সাঁতালি নাকাডাল, মেন্দাবাড়ি, দলসিংপাড়া, আটিয়াবাড়ি, কালচিনি, হ্যামিলটনগঞ্জ-সহ বির্স্তীণ এলাকা থেকে তাঁদের গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়। সকালে ঝাউবনের মাঝে পুরি তরকারি, জিলিপি ও চা দিয়ে প্রায় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের প্রাতরাশ করানো হয়। তার পর আমরা এই বৃদ্ধবৃদ্ধাদের নখ, চুল দাড়ি কেটে চুলে কলপ করার ব্যবস্থা হয়। অনেকেই চুল, দাড়ি কেটে ভোল পাল্টে ফেলেন। কয়েক জন কলপ করান। বনভোজনে উপস্থিত থাকা প্রত্যেককে শীতের টুপি ও কম্বল দেওয়া হয়। সংগঠনের সদস্য প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “পিকনিকে সামিল হয়ে বৃদ্ধবৃদ্ধাদের মুখের হাসিই আমাদের পুরস্কার।” কালচিনি প্রবীন নাগরিক সমিতির সভাপতি দুখিয়া মাহালি মনে করেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানে প্রবীন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করতে পারলে নিজেদের সমাজের মুল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করেন না। কালচিনি চা বাগানের বাসিন্দা বুদ্ধদেব বারলা বলেন, “বনভোজনে এসে খুব ভাল লাগল। এখানে সবাই আমার সমবয়সী। পুরোনো সব দিনের কথা মনে পড়ে গেল। |