স্ত্রীকে লুকিয়ে রেখেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনই অভিযোগ তুলে নিজের স্ত্রীকে ফিরে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন স্বামী কৃষ্ণ প্রামাণিক। পেশায় মণ্ডপশিল্পী কৃষ্ণবাবু নবদ্বীপ পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগানের বাসিন্দা।
কৃষ্ণবাবুর সঙ্গে বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয়েছিল প্রতাপনগর রুদ্রপাড়ার বাসিন্দা বিশাখা দেবীর। বিশাখাদেবীর বাবা শেখর দেবনাথ এলাকায় পরিচিত ব্যবসায়ী। নিজেদের পছন্দে বিয়ে করলেও কৃষ্ণবাবুকে কোনওদিনই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নেননি বলে অভিযোগ। কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘গত নভেম্বরের শেষ দিকে আমি প্যান্ডেলের কাজে হায়দরাবাদ গিয়েছিলাম। সেই সময় আমার স্ত্রী অসুস্থ থাকার কারণে ওকে বাপের বাড়িতে রেখে এসেছিলাম। এরপর দিন পনেরো আগে আমায় শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাকে জানানো হয়, স্ত্রীকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ধারণা আমার এই দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতির সুযোগে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পনা করেই বিশাখাকে অন্য কোথাও সরিয়ে দিয়েছেন। আমি আমার স্ত্রীর সন্ধান পেতে তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
গত ১৪ জানুয়ারি হায়দরাবাদ থেকে নবদ্বীপে ফিরে এসেছেন কৃষ্ণ। তিনি বলেন, “এই ক’মাসে আমি অনেকবার স্ত্রীর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি।” তারপরে বাড়ি ফিরেই তিনি প্রতাপনগরে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্ত্রীর ব্যাপারে কোনও খবরই সেখান থেকে তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে কৃষ্ণবাবুর অভিযোগ। এদিকে কৃষ্ণবাবুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিশাখার ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। প্রতাপনগরের বাড়িতে বিশাখার বাবা ও মা কেউ নেই বলে জানানো হয়েছে। বিশাখার ঠাকুর্দা নিত্যানন্দ দেবনাথ বলেন, ‘‘বিশাখা কোথাও চলে গিয়েছে। তার কোনও খবর আমাদের জানা নেই।’’ কিন্তু বাড়ির বিবাহিত মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে থানায় কেন অভিযোগ করা হল না? এ প্রশ্নের অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি দেবনাথ পরিবারের কাছ থেকে। তবে নিত্যানন্দবাবু জানিয়েছেন, ‘‘শুনেছি বিশাখা এক জনের সঙ্গে বর্ধমানের দিকে গিয়েছে। তবে বর্ধমানের কোথায় আছে বা কার সঙ্গে গিয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানি না।’’ কৃষ্ণবাবুর বক্তব্য, ‘‘ আমাকে যে ওরা পছন্দ করেন না, সেটা ওরা প্রথম থেকেই নানা ভাবে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মেয়ের সঙ্গে ওরা সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রেখেই চলেছেন। তাই আমার ধারণা ওঁরা অন্য কোথাও বিশাখার বিয়ে দেওয়ার জন্য হারিয়ে যাওয়ার গল্প ফেঁদেছেন।’’
বিশাখার খোঁজে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। |