কনকনে কুয়াশায় ভোগান্তি করিমপুরে
ক দিকে কনকনে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাস। ফলে ভোর কিংবা রাতে যাতায়াত করাটাই এখন মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ সীমান্তের করিমপুর কিংবা তেহট্ট এলাকার মানুষের। জানুয়ারির ঠান্ডা ও কুয়াশা মানেই করিমপুরের মানুষের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে ১৯৯৮ সালের সেই মর্মান্তিক ঘটনা। সে বছর ১৩ জানুয়ারি পিকনিক করে বাড়ি ফিরছিলেন করিমপুর এলাকার একদল ছাত্রছাত্রী। ভোরের জমাট কুয়াশায় বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি সোজা নেমে যায় জলঙ্গি এলাকার পদ্মাগর্ভে। জলে ডুবে মারা গিয়েছিলেন একজন শিক্ষক ও ৬১ জন ছাত্রছাত্রী। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ১১ ডিসেম্বর করিমপুরের কাঁঠালিয়া মাঠ এলাকায় ভোরের কুয়াশার সুযোগ নিয়ে বাস ডাকাতি করেছিল একদল দুষ্কৃতী। সব মিলিয়ে এই এলাকার মানুষের কাছে শীতের ভোর কিংবা রাতে যাতায়াত মানেই দুর্ভোগের পাশাপাশি আতঙ্কও বটে।
দিন কয়েক আগে করিমপুর থেকে ভোরের বাসে কলকাতায় গিয়েছিলেন আনন্দপল্লির বাসিন্দা ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাল্গুনীবাবু বলেন, ‘‘এই এলাকা থেকে কৃষ্ণনগর বা সরাসরি কলকাতায় যাতায়াতের একমাত্র উপায় বলতে বাস। শীতকালে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার ভয়। অন্য দিকে বাস ডাকাতির সেই পুরনো স্মৃতি এখনও ফিকে হয়নি। তাছাড়া বাসের জানালার ফাঁক দিয়েও ঢুঁকে পড়ে হাওয়া।’’ কিন্তু যাঁদের ভ্যান বা লছিমনে যাতায়াত করতে হয়, তাঁদের কষ্ট আরও অনেক বেশি। করিমপুর থেকে বিভিন্ন রুটে যাতায়াতের বাস খুব সীমিত। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই এলাকায় যাওয়া বা সেখান থেকে করিমপুরে আসার জন্য ভরসা বলতে লছিমন, সাইকেল, ভ্যান বা মোটরসাইকেল। পিপুলবেড়িয়া এলাকার রহমান সেখ দিনকয়েক আগে রাতদুপুরে অসহ্য পেটের যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। এদিকে সেই রাতে করিমপুর আসার কোনও বাসও নেই। ফলে সেই ঠান্ডার মধ্যেই লছিমনে চাপিয়ে তাঁকে প্রায় ১১ কিমি পথ উজিয়ে নিয়ে আসা হয় করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। তিনি বলেন, ‘‘এ ছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই। শীতের এই ভোগান্তি আমাদেরও গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।’’
করিমপুর কলকাতা রুটের এক বাসচালকের কথায়, ‘‘শীতকালটা আমাদের কাছেও একটা বাড়তি দুশ্চিন্তা। একদিকে ঘন কুয়াশার কারণে গাড়ি আস্তে চালাতে হয়। না হলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এদিকে রাস্তার অবস্থাও খুব ভালো নয়। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতেও অনেক সময় লেগে যায়।’’ করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিধান দত্ত বলেন, ‘‘ঠান্ডাতে কষ্ট তো হয়ই, তা ছাড়াও কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা ও বাস ডাকাতির ভয়ও কাজ করে। সেই কারণে আমরা সরাসরি ক্যাশ টাকা না নিয়ে ড্রাফট বা এটিএম কার্ডের উপরেই বেশি জোর দিই।’’
নদিয়া বাস মালিক সমিতির সম্পাদক পীযূষ রক্ষিত বলেন, ‘‘শীতকালের কুয়াশায় সাবধানে চালাতে হয় সব বাস চালককেই। এই সময়ে আমরাও সব বাস চালকদের সতর্ক করি। শীত না পড়তেই বাসের জানালা দরজাগুলোও মেরামত করে ফেলা হয়।’’
তেহট্টের এসডিপিও মলয় মজুমদার বলেন, ‘‘শীতকালে ভোরে ও রাতে সর্বত্রই পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কাঁঠালিয়া মাঠেও রাতে ও ভোরের বাসে পুলিশ নজর রাখে। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুরে আসার শেষ বাসে ও ভোরের বাসেও পুলিশ থাকে।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.