মাঝে মাঝেই ছবি তুলছিলেন পাহাড়ের। গ্যাংটকে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে এসে অভিভূত রুড খুলিট। রবিবার খেলার শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসে বলে ফেললেন অনেক কথাই।
• ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। ফুটবল যে দেশেও এত জনপ্রিয়, সেটাই জানা ছিল না। সুযোগ পেলে আরও একবার আসতে চাই।
• ভারতের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রব বানকে চিনি না। আমাদের দেশের কোচ হলেও নাম শুনিনি।
• বলতে কোনও দ্বিধা নেই, বিশ্বের এক নম্বর ফুটবলার এখন মেসি। রোনাল্ডো বা স্নাইডার নয়।
• আমাদের সময় এ সি মিলান এক নম্বর ক্লাব ছিল। এখন বার্সেলোনা। তবে গুয়ার্দিওলার সাফল্যে রাইকার্ডের অবদান অনস্বীকার্য। গুয়ার্দিওলার আগে ওই কোচ ছিল বার্সার।
• আসন্ন ইউরো কাপে নেদারল্যান্ডসই ফেভারিট। আমার দেশ বলে বলছি না, এখন যে মাপের ফুটবল খেলছে হল্যান্ড সেখানে ওরা ইউরো কাপ চ্যাম্পিয়ন না হতে পারলেই বেশি অবাক হব।
• শুধু শিল্প আর প্রতিভা দিয়ে বিশ্বকাপ জেতা যায় না। বিশ্বকাপ জেতার জন্য নির্মম হতে হয়। ২০১০ বিশ্বকাপে নির্মম ফুটবল খেলেছি বলেই ফাইনালে যেতে পেরেছিলাম আমরা। |
খুলিতের পিছনে গ্যাংটকের পাহাড়। পাশে শ্যাম থাপা। রবিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
গ্যাংটকের কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে রবিবার খুলিটকে দেখতে ভিড় করেছিলেন প্রায় দশ হাজার সমর্থক। কিন্তু মহাতারকার ফুটবল জাদু দেখার রাস্তায় কাঁটা হয়ে দাঁড়াল খুলিটের চোট। তবু নেদারল্যান্ডের প্রাক্তন বিশ্বকাপারকে নিয়ে উৎসাহের কোনও অভাব ছিল না। ম্যাচ না খেললেও, কোচ হিসেবেই মাতিয়ে দিলেন স্টেডিয়াম। সাইডলাইনের ধারে সারাক্ষণ ছটফট করে গেলেন খুলিট। ম্যাচের শেষে বললেন, “খেলার খুব ইচ্ছা ছিল। চোটের জন্য পারলাম না। পরের বার আসলে নিশ্চিয় খেলব।” এ বার শুধু পায়ে বল নাচানো আর কোচ খুলিটকে দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হল গ্যাংটকবাসীকে। বিকাশ ধোরাসু যখন পৌঁছলেন, তখন রাত হয়ে গিয়েছে।
খুলিট বাদে আরও একজন বিশ্বকাপারকে নিয়ে উন্মাদনা ছিল দেখার মতো। ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ক্রিশ্চিয়ান কারেম্বু। প্রথমে যাঁকে খুলিট ভেবেই হইচই পড়ে যায় স্টেডিয়ামে। আসল খুলিটের তো এখন চুল কমে এসেছে। লম্বা চুলের কারেম্বু গোল না করতে পারলেও, স্কিল দেখিয়ে মন জিতে নিলেন অনেকের। ফুটবল নিয়ে মানুষের এত উৎসাহ দেখে খুলিট বললেন, “অসাধারণ লাগছে। ভাবতেই পারিনি ভারতেও ফুটবল নিয়ে এত মাতামাতি হতে পারে।”
খুলিট না নামলেও দ্বিতীয়ার্ধে সিকিমের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। ছিলেন অ্যালভিটো ডি’কুনহাও। ভাইচুংরাই ৭-৪ জিতলেন। খুলিটদের দলে খেললেন আনচেরি, রাহুল বসুরা। রাহুলের সঙ্গে কিছু বলিউড তারকাও ছিলেন মাঠে। তবে যাবতীয় শোরগোল হচ্ছিল শুধু খুলিটকে ঘিরেই। স্টেডিয়ামের চিত্র সাংবাদিক হোক কিংবা গ্যালারির হাজার হাজার মোবাইল ক্যামেরা- উদ্দেশ্য একটাই খুলিটকে লেন্সবন্দি করা। রাহুল বসু, নেহা ধুপিয়ারাও বাদ গেলেন না। রাতে খুলিটকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে নিলাম হল। সেখানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। |