এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেলে হাওড়ার শ্যামপুরের বালিকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ মোস্তাফা (২৯) নামে ওই যুবককে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের চত্বরে বমি করতে দেখেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। প্রথমে তাঁকে বাগনানের পটলডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে থেকে পরে স্থানান্তরিত করানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। রাতে সেখানেই তিনি মারা যান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির কারণে ওই যুবক বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশ ও ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মোস্তাফা কলকাতায় দর্জির কাজ করতেন। গ্রামে দু’বিঘা জমিতে বাড়ির খোরাকির জন্য চাষও করতেন। তাঁর চার ছেলেমেয়ের মধ্যে তিন জন থ্যালাসেমিয়ায় মারা গিয়েছে।
ছেলেমেয়েদের চিকিৎসার খরচের জন্য তিনি দেনায় জড়িয়ে পড়েন। এ বার নিজের জমিতে চাষ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ট্রাক্টর ভাড়া, সার এবং কীটনাশক কেনার জন্য তাঁর কিছু টাকার দরকার হয়। বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড়ের জন্য তিনি স্ত্রীর কাছে গহনা চেয়েছিলেন। কিন্তু স্ত্রী তা দিতে অস্বীকার করেন। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মোস্তাফার মনোমালিন্য চলছিল।
মোস্তফার কাকা শেখ লতিফ বলেন, “ছেলেমেয়েদের চিকিৎসার জন্য মোস্তাফার অনেক দেনা হয়ে গিয়েছিল। কয়েক দিন ধরেই টাকাপয়সা নিয়ে বৌমার সঙ্গে ওঁর গোলমাল হচ্ছিল। ট্রাক্টরের ভাড়া, সার এবং কীটনাশক কিনতেও ওর বেশ কিছু টাকার দরকার হয়। ” মোস্তফার স্ত্রী বলেন, “এমনিতেই সংসার চলছিল না। মেয়ের এখনও বই কেনা হয়নি। এর আগেও আমার কিছু গহনা ও নিয়েছিল। কিন্তু সেগুলি আর ফিরে আসেনি। তাই শেষ সম্বল আমার গহনাগুলি আমি দিতে রাজি হইনি। এত বড় কাণ্ড যে ঘটবে আমি ভাবিনি।” দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। |