ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডের ধার ঘেঁসে ফি শনিবার হাট, প্রাণান্ত মানুষের
লুবেড়িয়া শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড। প্রতি শনিবার ব্যস্ত এই রাস্তার দু’পাশে হাট বসে। জামা-কাপড়, মাদুর, গামছা-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় টুকিটাকি বহু জিনিস নিয়ে রাস্তার ধারে বসে পড়েন বিক্রেতারা। কিন্তু রাস্তার ধারের অনেকটা জায়গা এমনিতেই দখল হয়ে গিয়েছে। তার উপরে, ফি শনিবার হাটের জেরে রাস্তায় চলাচল মুশকিল হয়ে পড়ে। যানজটে নাকাল হন মানুষ।
হাওড়া ময়দান-সংলগ্ন এলাকার রাস্তার দু’ধার এবং বঙ্কিম সেতুর দু’দিকের ফুটপাথে মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা বসতেন। ফলে, সোম ও মঙ্গলবার হাওড়া শহরে যান চলাচল ব্যাপক ভাবে বিঘ্নিত হত। বছরের পর বছর ধরে এই ব্যবস্থা চলতে থাকলেও পুলিশ-প্রশাসন ছিল নির্বিকার। সম্প্রতি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডের উদ্যোগে এই ফুটপাথ থেকে ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়া হয়। ফলে শহরে যান চলাচলে গতি এসেছে। বর্তমানে এই ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প জায়গার সন্ধান করছে প্রশাসন।
এই একই ব্যবস্থা কেন উলুবেড়িয়া শহরের জন্য ভাবা হবে না, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, উলুবেড়িয়ার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড। সপ্তাহের শনিবার দিনটি ৫৪ গেট, গাদিয়াড়া প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের গাড়ির চাপ বাড়ে। আবার মাসের প্রথম ও তৃতীয় শনিবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত খোলা থাকে। রাস্তার উপরে গাড়ির চাপ বাড়ে এই দিনগুলিতেও। কিন্তু এক কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে বসা এই হাটের ফলে যানজট লেগেই থাকে। প্রাণান্তকর অবস্থা হয় মানুষের। মঙ্গলাহাট সরিয়ে দেওয়ার ফলে ইদানীং উলুবেড়িয়ার হাটে তাপ বেড়েছে বলেও জানালেন স্থানীয় মানুষ।
নিজস্ব চিত্র।
আগে এই এলাকায় গরুর হাট বসত। বর্তমানে তা অবশ্য সরেছে। এই হাটটি সরানো গেলে খুবই সুবিধা হত বলে স্থানীয় মানুষের বক্তব্য। স্থানীয় বাসিন্দা ঝন্টু নায়েক বলেন, “এই হাটকে স্থানান্তরিত করলে আখেরে লাভ হবে সে সব ব্যবসায়ীর, যাঁরা এই হাটে দোকান দেন। কারণ, জায়গার অভাবে খদ্দেরদের ভাল ভাবে মালপত্র দেখানোই যায় না। দোকানগুলিতেও বেশি মাল রাখা যায় না। হাট স্থানান্তরিত হলে ব্যবসায়ী-খদ্দের উভয়ই শান্তিতে কেনাবেচা করতে পারবেন।”
ব্যবসায়ীদের তরফে বিশ্বজিৎ ঘোষাল বলেন, “পুনর্বাসন দিয়ে আমাদের সরানো হলে ভালই হয়। কারণ, রাস্তায় বসে ব্যবসা করতে খুবই অসুবিধা হয়।” তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, পুনর্বাসন ছাড়া সরাতে গেলে আন্দোলনে নামবেন। অন্য এক ব্যবসায়ী আনন্দ সরকারও বলেন, “মঙ্গলাহাটে পুনর্বাসনের দাবিতে ইতিমধ্যেই আন্দোলন চলছে। এখানেও আমাদের সরানোর কথা উঠলে আন্দোলন হবে।”
উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন বলেন, “হাটটি পুরসভা এলাকায় পড়ে। তাই হাট সরানোর কাজে পুরসভা এগিয়ে এলে প্রশাসনিক ভাবে সব রকম সাহায্য করা হবে।” কিন্তু সমাধান সূত্রের কথা জানাতে পারেনি পুরসভা। পুরপ্রধান দেবদাস ঘোষের কথায়, “হকারদের পুনর্বাসনের কথা না ভেবে কিছু করা যাবে না। কিন্তু পুনর্বাসন দেওয়ার মতো টাকার সংস্থান নেই আমাদের।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুলতান আহমেদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার ‘আশ্বাস’টুকুই শুধু দিতে পেরেছেন তিনি। সিপিএমের ১ নম্বর জোনাল কমিটির সম্পাদক শেখ সাবিরের কথায়, “বিকল্প ব্যবস্থা করে এই হাট অন্যত্র সরাতে পারলে আখেরে সকলেরই লাভ হবে। তবে এর জন্য সদিচ্ছা চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.