মাওবাদী মাইনে পিছনের গাড়িটি উড়ে যাওয়ার পরেই ছুটে আসতে থাকে ঝাঁক ঝাঁক গুলি। বেগতিক দেখে জঙ্গলে গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন ভান্ডারিয়ার বিডিও বাসুদেব প্রসাদ। আর তাতেই প্রাণ বাঁচে তাঁর। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও সহজ হতে পারছেন না বাসুদেববাবু। শনিবার গঢ়বা জেলার ভান্ডারিয়ায় মাওবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন ১৩ জন পুলিশ। বাসুদেববাবুর গাড়ির পিছনেই ছিল পুলিশের মাইন-রোধী গাড়িটি। বিস্ফোরণে সেই গাড়িটি উড়ে যায়। বাসুদেববাবু জানিয়েছেন, তার পরেই জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি।
বিস্ফোরণের পরে আহত পুলিশকর্মীদের উপরে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় মাওবাদীরা। বাসুদেববাবুর ধারণা, প্রায় ১৫০ জন মাওবাদী এই হামলায় সামিল হয়েছিল। রবিবার ঘটনার আরও সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, আহত পুলিশকর্মীরা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পরে আরও একটি বিস্ফোরণ হয়। পরে শুরু হয় গুলিবর্ষণ।
পুলিশের দাবি, আহত পুলিশদের মাথায় গুলি করে মাওবাদীরা। পরে মাইন-রোধী গাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে সাব-ইনস্পেক্টর রামবলী সিংহ ও তাঁর এক সহকর্মীর দেহ গাড়ির মধ্যে ফেলে দেয় তারা। বাসুদেববাবুর গাড়ির চালককেও মাওবাদীরা আটক করে রেখেছিল। আবার সুজিতকুমার যাদব ও অন্য এক আহত পুলিশকে ছেড়েও দেয় মাওবাদীরা। পরে পুলিশ ও সিআরপির বিরাট বাহিনী এসে পড়ে। তাদের সঙ্গেও মাওবাদীদের সংঘর্ষ হয়। লড়াইয়ের পরে উদ্ধার পান বাসুদেববাবু। ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিজি জি এস রথ বলেছেন, “এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে পুলিশকর্মীরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি মানেননি।”
বাঢ়গড় গ্রামের একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরিকে কেন্দ্র করে গ্রামের মুখিয়া রামদাস মিনজের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল অনশন। ওই বিবাদ মেটাতেই বিডিও বাসুদেববাবু ও গঢ়বা জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ সুষমা মেটা ওই অঞ্চলে যান।
পুলিশের ধারণা, ফাঁদ পাততে মাওবাদীরা মুখিয়া রামদাস মিনজের সাহায্য নিয়েছিল। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রামদাসই বাসুদেববাবু ও সুষমা মেটাকে আসতে অনুরোধ করেন। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। মাওবাদী মুখপাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি দাবি করেছে, সুষমা ও আরও তিন জনকে অপহরণ করেছে তারা। লাতেহার জেলা থেকে সব পুলিশ শিবির সরিয়ে নিলে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হবে। ঝাড়খণ্ড পুলিশের অবশ্য দাবি, সুষমার অপহরণ নিয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। |