গোয়ায় কাঁটা একই হাতিয়ার
দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ তিন রাজ্যে অস্ত্র কংগ্রেসের
স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি থেকে কমনওয়েলথ গেমস, উপর্যুপরি দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রে তারা যথেষ্টই চাপের মুখে। তবু দুর্নীতির বিরুদ্ধে জন-অসন্তোষই কংগ্রেসকে এখন ভরসা জোগাচ্ছে তিন রাজ্যের ভোটে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও পঞ্জাব উত্তর ভারতের তিন রাজ্যেই কংগ্রেস বিরোধী দল। ভোট ময়দানে তাই ক্ষমতাসীন সরকার তথা শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তাবৎ অভিযোগ ও মানুষের ক্ষোভকেই আক্রমণের প্রধান অস্ত্র করে নিয়েছেন সনিয়া-রাহুল-মনমোহনরা। যদিও গোয়ার ক্ষেত্রে ছবিটা বিপরীত। সেখানে ক্ষমতাসীন পক্ষ কংগ্রেসই।
কংগ্রেসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতার কথায়, ইউপিএ সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ কংগ্রেসের ভাবমূর্তিতে যে আঁচ ফেলেছিল তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। সেই প্রেক্ষাপটেই এক বছর আগে বুড়ারিতে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের মঞ্চ থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহ। দুর্নীতি দমনে একাধিক ব্যবস্থাও নিয়েছে ইউপিএ সরকার। তাতে ক্ষত নিরাময় কতটা হয়েছে তা পরের প্রশ্ন, কিন্তু একটা বিষয় ঠিক, গত প্রায় দেড় বছর ধরে লোকপাল-সহ নানান বিতর্কের জেরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ড এই তিন রাজ্যে শাসক দল বসপা, অকালি ও বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই দুর্নীতির প্রশ্নে মানুষের অসন্তোষ শাসক দলের বিরুদ্ধেই ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হবে বলে আশা করছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ডে ভোট ৩০ জানুয়ারি। এই দু’রাজ্যে কংগ্রেসের প্রচারের কাণ্ডারী সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহ। আর উত্তরপ্রদেশে প্রচারের রাশ রাহুল গাঁধীর হাতে। গত কাল কংগ্রেসের এই তিন শীর্ষ নেতা একযোগে প্রচারে ছিলেন ভোট ময়দানে। ক্ষমতাসীন সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সরকারি তহবিলের তছরুপের অভিযোগই ছিল এই ত্রয়ীর প্রচারের মূল বিষয়। উত্তরাখণ্ডে প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের বিরুদ্ধে কুম্ভ মেলার আয়োজন-সহ বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ভোটের কয়েক মাস আগে তাঁকে সরিয়ে কৌশলগত ভাবেই ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির’ ভুবনচন্দ্র খান্ডুরিকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপি। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে প্রচারে গিয়ে সনিয়ার বক্তব্য, ভোটের আগে স্রেফ মুখ্যমন্ত্রী বদল করলেই দুর্নীতির অভিযোগ ধুয়ে যায় না। কেন্দ্রের অনুদানের চল্লিশ হাজার কোটি টাকা তছরুপ করেছে এই রাজ্যের বিজেপি সরকার।
একই ভাবে পঞ্জাবে প্রচারে গিয়ে অকালি-বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন মনমোহন। বলেছেন, “অকালি-বিজেপি পঞ্জাবের সংস্কৃতিই বদলে দিচ্ছে। প্রতিবেশী রাজ্য হরিয়ানার থেকে পিছিয়ে পড়েছে পঞ্জাব।
উত্তরপ্রদেশে দুর্নীতির দায়ে শুধু মায়াবতীকেই কাঠগড়ায় তুলছেন না রাহুল, একই অভিযোগ করছেন মুলায়ম সিংহ যাদবের বিরুদ্ধেও। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে বসপা সরকারের দুর্নীতির প্রসঙ্গে ‘হাতির টাকা খাওয়া’ নিয়ে রাহুলের তোলা স্লোগান ইতিমধ্যেই ভোট ময়দানে জনপ্রিয় হয়েছে। রাজ্যে অনুন্নয়নের জন্য রাহুল মায়াবতীর দুর্নীতিকেই অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করছেন। ভোটের মুখে স্বাস্থ্য মিশন, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা নয়ছয়-সহ মায়াবতীর বিরুদ্ধে যে ভাবে দুর্নীতির ঘটনা ফাঁস হচ্ছে তাতেও উজ্জীবিত কংগ্রেস।
তবে দুর্নীতির বিষয় নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে উত্তর ভারতের তিন রাজ্যে কংগ্রেস পুনরুজ্জীবনের পথ প্রশস্ত হওয়ার আশা দেখলেও, একই কারণে গোয়ার ভোটে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগেই রয়েছে কংগ্রেস। সেখানে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ কম নয়। ভোটের মুখেই খনি কেলেঙ্কারি নিয়ে দিগম্বর কামাত সরকারের ওপর কালো মেঘ জমেছে। ফলে উত্তরের তিন রাজ্যে যা অস্ত্র, গোয়ায় সেটাই কাঁটা কংগ্রেসের কাছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.