‘কার-পাশ’-এ আপত্তি, বন্ধ আমদানি-রফতানি
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত-বাণিজ্যে গতি বাড়াতে এক দিন আগেই পেট্রাপোলে চালু হয়েছে অভিন্ন ‘কার পাশ’ ব্যবস্থা। কিন্তু ওই ‘পাশ’ নিয়ে ট্রাক-চালকদের একটি বড় অংশের আপত্তিতে রবিবারেই পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোলের মধ্যে ‘ধাক্কা’ খেল সীমান্ত-বাণিজ্য। দিনভর কার্যত বন্ধ রইল আমদানি-রফতানি। বিকেলে দুই দেশের শুল্ক দফতর, ট্রাক চালকদের প্রতিনিধি এবং ‘ক্লিয়ারিং-ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট’দের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসেন। তার পরে মাত্র চারটি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোলে যায়। বাংলাদেশ থেকে একটিও ট্রাক আসেনি।
পেট্রাপোলের ভারতীয় শুল্ক দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (কার্গো) পদ্মশীল জুমলে বলেন, “দুই দেশের ক্লিয়ারিং-ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ও ট্রাক-চালকেরা ‘কার-পাশ’ নিয়ে কিছু সমস্যার কথা তোলায় আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে কিছু সমস্যা সামনে আসে। আলোচনার মাধ্যমে তা মেটানো সম্ভব। সে কথাই সবাইকে বলা হয়েছে।” আজ, সোমবার থেকে আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক ভাবেই চলবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
পেট্রাপোলে বন্ধ সীমান্ত বাণিজ্য। পার্থসারথি নন্দী
ট্রাক চালকদের বড় অংশের নতুন ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তির কারণ কী?
আগে ট্রাক চালকদের নথিপত্র সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম দেখভাল করতেন ‘ক্লিয়ারিং-ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট’রা। নতুন ব্যবস্থায় ওই ‘পাশ’ সংগ্রহের জন্য ‘ক্লিয়ারিং-ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট’দের সাহায্য সে ভাবে পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন ট্রাক চালকদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ওই ‘পাশ’ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের দায় তাঁদের ঘাড়েই চলে আসছে। অথচ, তাঁরা বেশির ভাগই সে ভাবে পড়াশোনা শেখেননি। ফলে, তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। কেউ কেউ বেনাপোলে গিয়ে ‘অপদস্থ’ হওয়ার আশঙ্কাও করছেন। এ সব কারণেই এ দিন ট্রাক চালকদের একটি বড় অংশ বেনাপোলে যেতে চাননি। বন্দর সূত্রে অবশ্য ট্রাক-চালকদের আপত্তির আর একটি কারণ পাওয়া যাচ্ছে এত দিন অনেক চালকই ট্রাক এবং মালপত্রের যথাযথ নথিপত্র সঙ্গে রাখতেন না। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় তা রাখতেই হবে।
এ দিন পেট্রাপোলে ট্রাক চালক প্রভাস পাল বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি মাল খালি করে ট্রাক নিয়ে ফিরে আসতে পারি, তা হলে ওই পাশ নিতে আপত্তি নেই। কিন্তু যদি দু’-তিন দিন থাকতে হয়, তা হলে ওই পাশ নেওয়া সম্ভব নয়।” প্রসঙ্গত, এত দিন ট্রাক চালকদের অনেকেই বেনাপোলে পৌঁছনোর পরে মাল খালাস হতে দেরি হলে খাওয়া-ঘুমনোর জন্য এ পারে চলে আসতেন। এ দিন ওই ব্যবস্থাও চালু রাখার দাবি তোলেন তাঁরা। কিছু ট্রাক চালক অবশ্য নতুন ব্যবস্থায় কোনও আপত্তি তোলেননি। তবুও তাঁরা ট্রাক নিয়ে কেন বেনাপোলে গেলেন না? ওই ট্রাক চালকদের কয়েকজন জানান, ‘গোলমাল’ হওয়ায় তাঁরা ঝুঁকি নেননি।
শুল্ক দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাক থেকে মাল খালাস করে বেনাপোল থেকে চলে আসা বাধ্যতামূলক নয়। আর তা সম্ভবও নয়। কেননা, প্রতি দিন গড়ে এক সঙ্গে তিন-চারশো ট্রাক যায়। বেনাপোলে গিয়ে ট্রাক চালকেরা ‘অপদস্থ’ হওয়ার যে আশঙ্কা করছেন, তা ‘অমূলক’ বলেও মনে করছে শুল্ক দফতর। জুমলে বলেন, “আগে ট্রাক চালকদের কাছে যথাযথ নথিপত্র ও পরিচয়পত্র থাকত না বলে তাঁরা সমস্যায় পড়তেন। কিন্তু এখন আর তা হবে না।” ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে ট্রাক চালকদের অবহিত করা হয়নি। আমরা চাই, সেটা শুরু হোক। জটিলতা হলে, আলোচনা করে সমস্যা মেটানো যাবে। মনগড়া ধারণার ভিত্তিতে ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.