একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর সংস্কারের ক্ষেত্রে কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছিল মোট ৯ দিন। কিন্তু কাজ শেষে টাকা পাওয়ার সময়ে উক্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা দেখেন, যে কাজ করে সর্বোচ্চ ৮০০-১০০০ টাকা পাওয়া যায়, সেখানে বিশেষ এক জন পেয়েছেন ৫ হাজারের কিছু বেশি টাকা। তাঁরই পরিবারের অন্য সদস্য পেয়েছেন এক হাজারের কিছু বেশি টাকা। স্বভাবত এই নিয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। তাঁরা ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি করে পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন।
ঘটনাটি দুবরাজপুরের হেতমপুর পঞ্চায়েত এলাকার গিরিডাঙা গ্রামের। ওই সব শ্রমিকদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের চায়না দাসের দাবি, “এক পঞ্চায়েত কর্মীর ভুলেই এমনটা হয়েছে। নজরে আসতে বিডিও-র নির্দেশে ওই ব্যক্তিকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গিরিডাঙা গ্রামের কাছে ‘বাঞ্চি’ পুকুর সংস্কারে নিযুক্ত হয়েছিলেন ওই গ্রামের শ’দেড়েক জবকার্ডধারী। কাজ শেষে পঞ্চায়েত মাস্টার রোল তৈরি করে। কিন্তু পোস্ট অফিস থেকে নির্ধারিত টাকা তোলার সময়ে বিষয়টি জানতে পারেন বাসিন্দারা।
লক্ষ্মীন্দর হাজরা, রামু হাজরা, রাগিনী সরেনরা বলেন, “আমরা কেউ সাত দিন, পাঁচ দিন, কেউ বা তিন দিন কাজে গিয়েছিলাম। মজুরি বাবদ কেউ ৫২০ টাকা, ৩৩৭ টাকা, আবার কেউ ২৩৮ টাকা পেয়েছেন। অথচ গ্রামের নবীন সরেন সম পরিমাণ কাজের জন্য কী ভাবে এত টাকা পেলেন বুঝতে পারছি না। কাজ করার ক্ষমতা অনুযায়ী ২০০-৩০০ টাকা কম বেশি হতে পারে। কিন্তু ৫ হাজার টাকার বেশি কী করে হয়? এমন কী একই পরিবারের সদস্য হয়েও নবীন সরেনের পুত্রবধূ হাজার টাকার কিছু বেশি পাচ্ছিল। আমরা প্রতিবাদ করায় তাঁদের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে।” যদিও নবীন সোরেনের ছেলে সোজ সোরেন দাবি করেছেন, “যে পরিমাণ টাকা বাবা এবং আমার স্ত্রীর নামে এসেছে সেটা শুধু পারিশ্রমিক নয়, সিমেন্টের বোর্ড গাড়ি ভাড়া করে বয়ে আনার খরচ যুক্ত হয়েছে। কিন্তু ওই টাকার হিসেব আলাদা দেখানো হয়নি।” পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য এই দাবির সঙ্গে এক মত। তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সিমেন্ট দিয়ে তৈরি বোর্ড লাগানোর কথা। নবীনদের পরিবার সেটা করেছিল গাড়ি ভাড়া করে। তার জন্য যে পরিমাণ টাকা পাওয়া কথা, তা ১০০ দিনেক কাজের প্রকল্পের মধ্যে জুড়ে দেওয়াতেই বিপত্তি।” কিন্তু দু’টো আলাদা কাজ। তা হলে কী ভাবে এক সঙ্গে ধরা হল? এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি প্রধান। তবে পঞ্চায়েতের তরফে ভুল হয়েছে বলে তিনি মেনে নিয়েছেন। |