ফের জাল মদ উদ্ধার হল পূর্বস্থলী থেকে। শনিবার অভিযান চালিয়ে জালমদ উদ্ধারের পাশাপাশি এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
আবগারি দফতরের কালনা শাখা এবং পূর্বস্থলী থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালায় শনিবার। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পারুলিয়া এলাকার সিঁদুরপুর গ্রামে উদ্ধার করা হয় ১৫৫ বোতল জাল মদ, ১৭০ লিটার স্পিরিট, নামি সংস্থার অনুকরণে তৈরি মদের বোতলের ছিপি, লেবেল-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। যাঁর বাড়ি থেকে ওই সব সরঞ্জামগুলি মেলে, সেই শ্যামল দাসকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |
গত পাঁচ বছর ধরেই জালমদ তৈরির রমরমা কারবার চলছে পূর্বস্থলী থানা এলাকা জুড়ে। নানা জায়গায় অভিযান চালিয়ে মাঝেমধ্যেই জাল মদ উদ্ধার করে আবগারি দফতর ও পুলিশ। মাসখানেক আগেই সুলুন্টু এলাকা থেকে প্রায় তিনশো বোতল জাল মদ ও তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গত অগস্টে পূর্বস্থলীর চাঁইখালিতলা থেকে ৫৭২ বোতল নকল মদ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জাল মদের কারবারিরা বারবার আস্তানা বদল করে এই ব্যবসা চালায়। ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ আসে চোরা পথে। তৈরির পরে বিভিন্ন গ্রামে সেই মদ পাচার হয়ে যায় বিভিন্ন ‘এজেন্ট’-এর মাধ্যমে। উৎসবের মরসুমে নকল মদের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পুলিশ জানায়, চাঁইখালিতলায় অভিযানের সময়েই এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনের নাম জানা যায়। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুর, তুলসীডাঙা, নবপল্লি, দোগাছিয়া, জাহান্নগর ইত্যাদি এলাকায় জাল মদ তৈরির চক্র সক্রিয়। সম্প্রতি চুপি এলাকাতেও এই কারবার শুরু হয়েছে বলে আবগারি দফতর সূত্রে খবর।
শনিবারের অভিযানের পরে পুলিশ জানায়, শ্যামল দাস নামে ওই যুবকের বাড়িতেই জাল মদ তৈরি হত। যদিও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মূল অপরাধীরা এখনও অধরা বলে জানিয়েছে আবগারি দফতর। পুলিশের দাবি, জেরায় শ্যামল জানিয়েছেন, জাল মদ তৈরির কারখানার মালিককে তিনি কম টাকায় বাড়ি ভাড়া দিয়েছিল। গোটা কারবার চালায় পল্টু ভট্টাচার্য নামে দোগাছিয়া এলাকার এক যুবক। রেলপথে মূলত ১০ লিটারের জারে স্পিরিট নিয়ে আসা হত। স্পিরিট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কাটোয়ার এক যুবক। সারা রাত ধরে তৈরি হত জাল মদ। সকাল হতেই পল্টু মালপত্র নিয়ে চলে যেত। এই কারবারের সঙ্গে পল্টু ছাড়াও হেমায়েতপুর, তুলসীডাঙা এবং নবপল্লি এলাকার আরও তিন যুবক যুক্ত বলে জেরায় জানিয়েছে শ্যামল। আবগারি দফতরের কালনা শাখার ওসি বিষ্ণুপদ রায় বলেন, “মূল কারবারিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।” |