আগামী আর্থিক বছরেই ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের নতুন কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বর্মা। সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকায় সামান্য কিছু কারিগরি সমস্যা থাকায় আধুনিকীকরণের কাজ কিছুটা ঢিমেতালে হয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি বিভাগের কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে।
শনিবার বিকেলে বার্নপুরের ইস্কো স্টিল প্ল্যান্ট পরিদর্শনে এসেছিলেন সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বর্মা। তিনি বলেন, “এই কারখানায় আমরা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। একটি সুসংহত ইস্পাত কারখানা তৈরি হচ্ছে। উৎপাদন হবে বছরে আড়াই লক্ষ টন।”
সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকার মধ্যে পুরুষোত্তমপুর গ্রামের কাছে ঝোড়াবুড়ি ধর্মীয় স্থানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে সমস্যা। এ নিয়ে সেলের চেয়ারম্যানের স্পষ্ট কথা, “আমরা অনেক আগেই ঠিক করে নিয়েছি সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকায় কোথায় কী হবে। সেক্ষেত্রে একটি বৃহৎ প্রকল্পের স্বার্থে ঝোড়াবুড়ির অংশটি ছাড়া হবে না। তবে বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। তাই বিশেষ কোনও মন্তব্য করছি না।” তিনি জানিয়েছেন, আদালতের বাইরে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ইস্কোর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারও সম্প্রতি আলোচনা করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে। পাশাপাশি তিনি জানান, এলাকার জমিদাতারা চাকরির যে দাবি করেছেন তা নিয়ে বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করার জন্য আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, পুরুষোত্তমপুরে একটি ধর্মীয় এলাকায় পাঁচিল তুলতে বাধা দেন জমিদাতারা। এর জেরে এক মাস বন্ধ ছিল কাজ। আপাতত সেখানে পাঁচিল তোলা হবে না, এই আশ্বাস দিয়ে পরে কাজ শুরু হয়। জমিদাতারা চাকরির দাবিও তুলেছেন। সব মিলিয়ে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
চেয়ারম্যান শনিবার জানান, আধুনিকীকরণ প্রকল্প এলাকায় সেন্ট্রাল প্ল্যান্টের কাজ শেষ। কোক ওভেন শেষের মুখে। এ’বছরই নতুন ব্যাটারি বিভাগের কাজ শেষ হবে। মার্চ মাসের মধ্যে দু’টি বয়লারের মধ্যে একটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। ব্লাস্ট ফার্নেস বিভাগের দু’টি কনভার্টারের কাজ হয়ে যাবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, ইস্কোর যে পুরনো বিভাগটি আছে সেটির উৎপাদন ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেখানকার শ্রমিক কর্মীদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কাজে লাগানো হবে।
ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০১১ সাল। কিন্তু সময় মতো তা শেষ করা যায়নি। কেন? সেলের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, কারখানার সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজন ছিল প্রায় ন’শো একর জমির। এর মধ্যে সাড়ে তিনশো একর জায়গা আশপাশের গ্রামগুলি থেকে কিনতে হয়েছে। এই বিশাল জমি জোগাড় করতেই বেশ কিছুটা সময় চলে গিয়েছে। পাশাপাশি সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে বর্জ্য সরিয়ে শক্ত মাটি বের করতে হয়েছে। তাতেও প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত অনেক সময় দিতে হয়েছে কতৃর্পক্ষকে। |