|
হেয়ারস্টাইল@কাটাকুটি.com
কায়দার হেয়ার কাট তো অনেক। চেনা চেহারা বদলে
ঝকঝকে নতুন লুক আনে। সেরা কোনটা? আলোচনায় দীপন পাল
| |
|
নব্বই দশকের শেষ থেকে চুলের বিভিন্ন কাট সম্বন্ধে হরেক রকম ধ্যানধারণার চল হয়েছে। পুরনো একঘেয়ে হেয়ারস্টাইল ঝেড়ে ফেলে ‘চলো পাল্টাই’ গোছের একটা হাওয়া এসেছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একঘেয়ে নিজের মুখ দেখতে দেখতে সকলে বোর, সুতরাং নিজেকে অহরহ গালাগাল দেওয়ার থেকে একটু অন্য রকম মানে ‘সামথিং ডিফারেন্ট’ লাগার ঝোঁকে সবাই ছুটছে। আগে আপনি গিয়ে পাড়ার সেলুনের চেয়ারে বসে হাতে কাগজ নিয়ে ‘উত্তমকুমার ছাঁট’ বায়না দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারতেন। কিন্তু এখন যে শুধু ঋতু অনুযায়ী চুলের স্টাইল পাল্টায় তা-ই নয়, আপনার কাজের ধরন, মেজাজের ধরন, গায়ের রং, পোশাকে পশ্চিমি হাওয়া ও প্রাচ্যের ছোঁয়া, আপনি রোগা না মোটা এমন নানা কারণের মিক্সচার ঘটে একটি চুলের স্টাইলে। সুতরাং হেয়ার কাট আর হেলাফেলার পর্যায়ে নেই। লম্বা-ছোট সব ধরনের চুলের ফ্যাশন এখন চলছে। |
|
ফ্রন্ট লেয়ারস টপ গ্র্যাজুয়েশন |
লম্বা চুলের জন্য আদর্শ সমস্ত চুলটিকে লেয়ার্স-এ কেটে মাথাটিকে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ১৮০ ডিগ্রিতে কাটতে হবে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র মাথার উঁচুটি ছোট হবে, বাকি সমস্ত অংশটি লম্বা থাকবে। |
আনটাইডি হেয়ারকাট |
ওপর থেকে খুব ছোট, নীচের অংশটি লম্বা। কিছুটা কার্লি, কিছুটা স্ট্রেট। হালকা কোনও জেলের সঙ্গে মিলিয়ে একটু ক্রাঞ্চ দিতে হবে। তবে আনটাইডি লুকটি আসবে। একে ‘ফাঙ্কি হেয়ারস্টাইল’ও বলা হয়। |
ফেদার কাট |
যাঁদের মুখটি গোলাকার এবং চুল স্ট্রেট, তাঁদের এই কাটটি সব থেকে ভাল মানায়। প্রথমে একটি কান থেকে অন্য কান পর্যন্ত পার্টিং করে অর্থাৎ সিঁথি কেটে নিতে হবে। এর পর নাক পর্যন্ত চুলটিকে লম্বা রেখে শূন্য ডিগ্রিতে কাটতে হবে। ফলে লেয়ারগুলো একের পর এক হালকা পালকের মতো মিশে থাকবে। |
৯০ ডিগ্রি হেয়ারকাট |
যাঁদের চুল পাতলা এবং হালকা ওয়েভ আছে তাঁদের পক্ষে এই হেয়ারকাটটি আদর্শ। সমস্ত চুলটিকে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গল-এ কাটা হবে। অর্থাৎ চুলের নীচ থেকে স্ক্যাল্প পর্যন্ত প্রতিটি চুলকে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গল-এ কাটতে হবে। যাঁরা চান চুলে একটু বাউন্স আসুক, তাঁরা এই কাটটি চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এটিকে ‘অলওভার স্টেপস’ বলা হয়। তবে খুব দক্ষ ব্যক্তি ছাড়া এই কাটটি করানো সম্ভব হবে না।
|
রেজার কাট |
রেজার কাটটি অনেক পুরনো হলেও এটির এখন ভীষণ চল, অর্থাৎ ইন-ফ্যাশন। যাঁদের চুল কোঁকড়ানো, তাঁরা যদি চুলের স্ট্রেটনিং বা স্মুদনিং করিয়ে তার পরে রেজার কাট করেন, তবে খুব ভাল লাগে। আজকাল সম্পূর্ণ ওপরটিকে ছোট করা হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে নীচের দিকটা রেজার স্পাইক করে কাটা হয়। এই কাটটিতে ‘লুক’-এর সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়। ছেলে-মেয়ে উভয়ের পক্ষেই খুব ভাল। |
|
ইনভার্টেড ব্লান্ট |
যাঁদের চুল স্ট্রেট এবং যাঁদের হালকা ওয়েভ আছে, দু’ধরনের চুলের পক্ষেই এই কাটটি সর্বশ্রেষ্ঠ। যাঁদের উচ্চতা কম তাঁদের দুঃখের দিন শেষ, পাশে লম্বা ছেলে পেতে চাইলে এই স্টাইলটি আদর্শ। যাঁরা খর্বকায়, সাধারণত তাঁদের গলার উচ্চতা কম হয়। এই স্টাইলটি গলা এবং ঘাড়ের অংশটিকে সম্পূর্ণ খোলা রেখে করা হয়, চুলের সামনের দিকটা অ্যারো করে অ্যাঙ্গল করা হয়। এই ভাবে প্রতিটি ধাপে কাটা হয়। যাঁরা বেঁটে তাঁদের অনেক সময় মনে হয় পশ্চিমি পোশাক তাঁদের জন্য নয়। কিন্তু এই কাটটি তাঁদের হীনম্মন্যতা থেকে মুক্ত করবে, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে অনায়াসেই জিনস কুর্তি পরে ডেটে যেতে পারবেন তাঁরা। এই স্টাইলটির বিশেষত্ব হল, আপাতদৃষ্টিতে লম্বা বলে মনে হয়। আর একটি কথা মনে রাখবেন, যাঁরা খুব মোটা, তাঁদের খুব ছোট চুল একেবারেই ভাল লাগে না। মোটামুটি কাঁধ পর্যন্ত লম্বা হলে ভাল লাগে। |
স্লাইডিং কাট |
সামনে ফেদার, কাঁধের নীচে হালকা স্টেপ করে কাটা হয়। খুব লম্বাদের পশ্চিমি পোশাকের সঙ্গে খুব ভাল লাগবে। |
ব্লান্ট |
লম্বাদের জন্য আর একটি বিশেষ কাট। যাঁদের গলা লম্বা ও চেহারা স্লিম, তাঁদের জন্য এটি ছাড়া কিছু ভাবা যায় না। ব্লান্টের চাহিদা আগেও ছিল এবং যুগ যুগ থাকবে। তিনটি কাট মিলিয়ে এটি করা হয়। যাঁরা খুব ছোট চুল পছন্দ করেন, অথচ চুল যাঁদের পাতলা, তাঁদের জন্য এটি খুব ভাল। যাঁরা ফ্যাশন-সচেতন বেশি, তাঁরা এটি চেষ্টা করতে পারেন। বিপাশা বসুর পছন্দের কাট। |
স্লিক কাট |
এটিকে রাফ অ্যান্ড হট কাটও বলা হয়। এর জন্য আপনাকে খুব সাহসী হতে হবে। একটা চুল লম্বা আর তার পরেরটা খুবই ছোট। কান সম্পূর্ণ খোলা থাকবে। এর মধ্যে যদি হালকা লালের স্ট্রিপ থাকে, তবে খুব ভাল লাগবে। ওয়েজড কাটের মধ্যে অসমান লেয়ার্স মিশিয়ে কাটলে ভাল দেখায়। তাতে কপার হাইলাইট করাতে হবে। |
কালারিং |
পাকা চুলের সমস্যা না থাকলে কালারিং না করানোই ভাল। বিশেষত, বার্গান্ডি, কপার, মেহগনি, এই সব ধরনের গ্লোবাল কালার না করাই শ্রেয়। গোল্ড, ব্লন্ড, এ সব চলছে না। যাঁরা খুব ফ্যাশন-সচেতন, ঠিক মতো সাজতে পারেন, তাঁরা হাইলাইট করাতে পারেন। কপার ও গোল্ডেন ব্লন্ড মিশিয়ে হাইলাইট করালে ভাল লাগে। তবে এর জন্য খুব ফর্সা হওয়া চাই। যাঁদের রং চাপা, তাঁরা সরু সরু স্ট্রিপ করুন, পুরো চুলে রং করবেন না। |
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|