হাসপাতাল প্রসূতিকে ‘ফিরিয়ে দেওয়ায়’ মাঝরাস্তায় ভূমিষ্ঠ হয়েছিল যে শিশু, শুক্রবারই তার মৃত্যু হল। অসুস্থ অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি তার মা-ও। আজ, শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক যুগ্ম সচিব ও এক উপ-স্বাস্থ্য অধিকর্তা তদন্তে বর্ধমানে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ঘটনাটির কথা জানাজানি হতেই বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার গদাধর মিত্র দাবি করেছিলেন, এক প্রসূতি জরুরি বিভাগে এলেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে কোনও ‘সিদ্ধান্ত’ হয়নি। এ দিন অবশ্য তিনি বলেন, “বুধবার বিকেলে ওই বধূকে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে তাঁকে শয্যায় না দেখতে পেয়ে বর্ধমান থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। তাঁকে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল, এই অভিযোগ ঠিক নয়।” কিন্তু গুরুতর অসুস্থ এক প্রসূতি কেন নিজে থেকে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাবেন, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। |
সদ্যোজাত বেগনি। নিজস্ব চিত্র |
উচ্চ রক্তচাপের কারণে বুধবার সন্ধ্যায় পার্বতী মাঝি নামে ওই প্রসূতিকে মঙ্গলকোটের নতুনহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রসব হতে এক মাস দেরি আছে দাবি করে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতে বাড়ি ফেরার উপায় না থাকায় হাসপাতালের সিঁড়িতে কাটান তিনি। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ি ফেরার সময়ে বর্ধমান শহরের কাছে তালিতে রাস্তাতেই তাঁর প্রসব হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা গাড়িতে করে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেন।
এ নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই মঙ্গলকোটে গোতিষ্ঠা গ্রামে প্রসূতির বাড়িতে মেডিক্যাল টিম পাঠান জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা। নিজে বর্ধমান মেডিক্যালে গিয়ে খোঁজখবরও নেন। রাতে পার্বতীদেবীকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এ দিন সকালে সেখানেই বাচ্চাটি মারা যায়। মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “একে শিশুটির ওজন ছিল মোটে দু’কেজি, তার উপরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও ছিল।” জেলাশাসক বলেন, “প্রসূতির পরিবার ও হাসপাতালের বক্তব্যের মধ্যে কয়েক জায়গায় অসঙ্গতি রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করবে।” |