রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল
স্টোর রুমে মজুত কেরোসিন, ক্ষোভ স্বাস্থ্য-কমিটির
মরি-কাণ্ডের পরেও ছবিটা বদলাচ্ছে না। খাস জেলা হাসপাতালেই মজুত থাকছে দাহ্যবস্তু। রয়ে যাচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাও।
সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের রেডিওলজি ওয়ার্ডের ঘরে হিটার জ্বেলে মাংস রান্না করেছিলেন কর্মীরা। তদন্তে নেমে হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্তারা পান ১১টি হিটার। পিছিয়ে নেই উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালও। এ বার সেখানে মিলল ড্রাম ভর্তি কেরোসিন তেল! এবং সেটা চোখে পড়ে আঁতকে উঠলেন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটি সদস্যেরাই। বস্তুত, শুক্রবার রায়গঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে স্থায়ী কমিটির ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল স্টোর রুমে প্রচুর পরিমাণে কেরোসিন মজুত দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কেরোসিন থেকে যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারে, এটা জেনেও কেন অফিসার-কর্মীরা তা সরাননি, সেই প্রশ্নে কোনও সদুত্তর না পেয়ে তাঁদের ক্ষোভ আরও বাড়ে। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্যাচার্য বলেন, “ড্রাম বোঝাই করে কেরোসিন তেল রাখা হয়েছে। যে কোনও সময়ে আমরির মতো অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা কেরোসিন অবলিম্বে সরিয়ে নিতে বলেছি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।”
রায়গঞ্জ হাসপাতালে বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং
কমিটি সদস্যরা। শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন তরুণ দেবনাথ।
হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা কমিটির সদস্যদের জানান, অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার কাজে স্টোভ জ্বালাতে হয়। সেই কারণে স্টোর রুমে কেরোসিন তেল রাখা হয়। এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা। তাঁদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে উত্তর দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেছেন, “সরকারি নিয়ম মেনে হাসপাতাল পরিচালনা ও চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নের ব্যাপারে কমিটির সদস্যদের পরামর্শ ও নির্দেশ মেনে চলা হবে।”
দাহ্যবস্তু মজুতের পাশাপাশি হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও চিকিৎসা পরিষেবায় নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েও ক্ষুব্ধ স্থায়ী কমিটি। এ দিন কমিটির সদস্যেরা হাসপাতালের একাধিক স্টোর রুম-সহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক কর্তা। বেলা ১১টা নাগাদ প্রথমে হাসপাতালের বহির্বিভাগ পরিদর্শন করেন তাঁরা। সেখান থেকে স্টোর রুমে যান। কেরোসিনের পাশাপাশি স্টোর রুমে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের হদিশ পেয়ে ক্ষুব্ধ কমিটির সদস্যেরা।
রুদ্রনাথবাবু বলেন, “২০০৫ সাল থেকে প্রতি বছর পর্যায়ক্রমে ওষুধগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। রোগীদের ওষুধ সরবরাহ না করে কেনও ওষুধগুলি ফেলে রেখে নষ্ট করা হল তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মীর গাফিলতি প্রমাণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া ভ্যাকসিন মজুত না-থাকলেও শীতাতপ যন্ত্র চালিয়ে রাখা হয়েছে। সমস্ত ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানানো হবে।” ইঁদুরে কেটে নষ্ট করে দেওয়া একাধিক বাক্স বোঝাই সাবান পড়ে থাকতে দেখেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা।
হাসপাতালের কর্মসংস্কৃতি নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ, “স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ সরকারি নিয়ম ও নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ডিউটি করছেন না। অনেকেই কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন। তাতে সমস্যা বাড়ছে।” তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে যে সব চিকিৎসক হাসপাতালে কর্মরত, তাঁদের বদলির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। জেলায় স্থায়ী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিয়োগ করে জেলা হাসপাতালে ‘আইসিইউ’ এবং ‘ট্রমা সেন্টার’ চালুর ব্যবস্থাও করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.